প্রতীকী ছবি
রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেশ কমেছে। মূলত মার্কিন ডলারের মান বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেওয়ায় এই দরপতন দেখা দিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দর হ্রাস পেয়েছে ০.৭ শতাংশ। প্রতি আউন্সের দাম দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩২৩ ডলার ৬৯ সেন্টে। সোমবার যা ছিল ৪ হাজার ৩৮১ ডলার ২১ সেন্ট। বিশ্ব ইতিহাসে তা ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ।
সেই হিসাবে একদিনের ব্যবধানে আউন্সে স্বর্ণের মূল্য নিম্নমুখী হয়েছে ৫৮ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৭ হাজার ৭০ ডলার।
আলোচ্য কার্যদিবসে ফিউচার মার্কেটে যুক্তরাষ্ট্রের বেঞ্চমার্ক স্বর্ণের আগামী ডিসেম্বরের সরবরাহ মূল্য নিম্নগামী হয়েছে ০.৪ শতাংশ। আউন্সপ্রতি দর স্থির হয়েছে ৪ হাজার ৩৪০ ডলার ১০ সেন্টে।
এর আগে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদের হার আরও কমানোর জোরালো সম্ভাবনা এবং নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে চাহিদা বাড়ায় সোমবার স্বর্ণের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল।
বিশ্বের প্রধান মুদ্রাগুলোর বিপরীতে ডলার সূচক ০.২ শতাংশ বেড়েছে। ফলে অন্যান্য মুদ্রার অধিকারী বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বর্ণ কেনা আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে, যা চাহিদার ওপর প্রভাব ফেলেছে।
বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান কে সি এম ট্রেডের প্রধান বাজার বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার বলেন, “আজ স্বর্ণের দামে পতন হয়েছে মূলত মুনাফা তোলা এবং নিরাপদ বিনিয়োগ প্রবাহ কিছুটা কমে যাওয়ায়। তবে ফেড যদি তাদের বর্তমান সুদ কমানোর নীতিতে অব্যাহত থাকে, তাহলে স্বর্ণের দামে যেকোনো পতনই বিনিয়োগকারীদের কাছে কেনার সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হবে।”
সিএমই ফেডওয়াচ টুলের তথ্য অনুযায়ী, বাজার এখন পুরোপুরি প্রত্যাশা করছে যে ফেডারেল রিজার্ভ এই মাসে সুদের হার এক-চতুর্থাংশ শতাংশ কমাবে এবং ডিসেম্বরে আরও একবার কমাবে। সাধারণত, সুদের হার কমলে সুদবিহীন সম্পদ হিসেবে স্বর্ণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
ওয়াটারার আরও যোগ করেন, “এই সপ্তাহের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) তথ্য প্রত্যাশার চেয়ে বেশি না এলে স্বর্ণের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।”
সরকারি অচলাবস্থার কারণে বিলম্বিত হওয়া ভোক্তা মূল্যসূচকের ওই তথ্য শুক্রবার প্রকাশের কথা রয়েছে। রয়টার্স জরিপ অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে বার্ষিক হিসেবে এই সূচক ৩.১ শতাংশ বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অচলাবস্থা টানা ২০তম দিনে গড়িয়েছে। এই অচলাবস্থার কারণে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ বিলম্বিত হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারী ও নীতি নির্ধারকেরা আগামী সপ্তাহের ফেড বৈঠকের আগে কার্যত ‘তথ্যশূন্য’ অবস্থায় রয়েছেন। হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট সোমবার জানান, চলতি সপ্তাহেই অচলাবস্থার অবসান হতে পারে।
বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এই সপ্তাহে মালয়েশিয়ায় চীনের উপ–প্রধানমন্ত্রী হে লিফেং-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের সম্ভাব্য বৃদ্ধিকে ঠেকানোর চেষ্টা করা হবে।
