রপ্তানিকারকদের তারল্য সহায়তায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোয়াপ সুবিধা চালু
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:০৩
দেশের রপ্তানিকারকদের তারল্য প্রবাহ সহজ করতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ঝুঁকি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নতুন সোয়াপ সুবিধা চালু করেছে। এর ফলে রপ্তানিকারকরা তাদের বৈদেশিক মুদ্রার অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ এখনই টাকায় রূপান্তর না করে স্বল্পমেয়াদী প্রয়োজনে টাকা সংগ্রহ করতে পারবেন।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে দেশের সব অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
সার্কুলার অনুযায়ী, এডি ব্যাংকগুলো এখন থেকে রপ্তানিকারকদের ৩০ দিনের বৈদেশিক মুদ্রা পুল এবং এক্সপোর্টারস রিটেনশন কোটা অ্যাকাউন্টে থাকা স্থিতির বিপরীতে সোয়াপ লেনদেন পরিচালনা করতে পারবে।
এই সোয়াপ ব্যবস্থায় ব্যাংকগুলো স্পট বা তাৎক্ষণিক মূল্যে রপ্তানিকারকের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কিনে টাকা প্রদান করবে। পরবর্তীতে একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে পূর্বনির্ধারিত একটি ফরোয়ার্ড দরে সেই বৈদেশিক মুদ্রা পুনরায় রপ্তানিকারকের কাছে বিক্রি করবে। ৩০ দিনের পুলের ক্ষেত্রে এই সোয়াপের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৩০ দিন। তবে ইআরকিউ তহবিলের ক্ষেত্রে তহবিলের প্রত্যাশিত ব্যবহারকালের ওপর ভিত্তি করে মেয়াদ নির্ধারিত হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো রপ্তানিকারকদের কার্যকরী মূলধনের চাহিদা পূরণ করা এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতি কমিয়ে আনা। সোয়াপ পয়েন্ট বা বিনিময় হার নির্ধারিত হবে টাকা ও সংশ্লিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার সুদের হারের পার্থক্যের ওপর ভিত্তি করে, যা বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট করেছে যে, এই সোয়াপ লেনদেনকে কোনো ধরনের ঋণ বা অর্থায়ন সুবিধা হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না।
শুধু দায়মুক্ত বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতির বিপরীতেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে। এছাড়া সোয়াপের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা কেবল বৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রমের খরচ মেটাতে ব্যবহার করতে হবে; কোনো প্রকার ফটকামূলক কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
এ সংক্রান্ত সকল লেনদেনের জন্য যথাযথ নথি সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়মিত প্রতিবেদন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি, ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাটি জারির দিন থেকেই কার্যকর হয়েছে এবং ব্যাংকগুলোকে তাদের রপ্তানিকারক গ্রাহকদের এ বিষয়ে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।
