Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

ভারতের অনীহায় আটকে আছে রপ্তানি কার্যক্রম

Icon

নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২০, ১৯:১০

ভারতের অনীহায় আটকে আছে রপ্তানি কার্যক্রম

বাংলাদেশ ও ভারতে করোনা বিস্তার রোধে সাধারণ ছুটি ও লকডাউন ঘোষণার পর থেকে দেশের সব বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়েও দুই দেশের নাগরিক পারাপার ছাড়া সব ধরনের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দীর্ঘ ৭৫ দিন পর ১৩ জুন বন্দরটির আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

সবশেষ, জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্দরটির আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করে। তবে করোনা সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসন ১৩টি শর্ত বেধে দেয়।

স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ১৩ জুন থেকে বন্দরে প্রতিদিন ১০০টি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।

১৩ জুন থেকে আজ শনিবার (২২ জুন) পর্যন্ত ভারত থেকে ছয়শ'র বেশি ট্রাক পাথর আমদানি করা হলেও সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে তার সিকি অংশ পণ্য রপ্তানি হয়নি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) থেকে রপ্তানির অপেক্ষায় আটকে রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের ৪টি ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ৩টি পণ্য বোঝাই কার্গো।

বাংলাবান্ধা বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শামসুল হক সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, আমদের পক্ষ থেকে পণ্য পাঠাতে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যটা হচ্ছে ভারতের দিক থেকে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি কোনো চিঠি না দেয়ায় এই ব্যাপারে বিশদ কিছু জানা নেই আমাদের।

তবে তারা যেহেতু পণ্য রপ্তানি করছে আমরাও রপ্তানি করতে পারবো। এই ক্ষেত্রে আলাদা কোনো নির্দেশনা থাকার কথা না। আর যতটুকু জেনেছি ভারতের সিএন্ডএফ এজেন্ট বলেছেন আমদানিকারকের পক্ষে কোনো প্রতিনিধি না থাকায় তারা পণ্য নিতে পারছেন না। কিন্তু আমাদানিকারক ও রপ্তানিকারকের মধ্যে আলোচনা ছাড়া ঢাকা থেকে পণ্য পাঠানোর কথা নয়।

বন্দরে আটকে থাকা পণ্যের সিএন্ডএফ এজেন্ট আলাউদ্দিন বাবু জানান, ঠিক কী কারণে ভারতে আমাদের কার্গো যেতে দেয়া হচ্ছে না, তা নিশ্চিত নই। তবে শুনেছি আমাদের কার্গো ভারতে গেলে, ভারত থেকে পাথরের ট্রাক আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমাদের পণ্য যেতে দেয়া হচ্ছে না। অথচ আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম চালকদের প্রদান করলেও বাংলাদেশ অংশেই কার্গো আটকে আছে। কবে কার্গো যেতে দেয়া হবে, তা এখনো নিশ্চিত নই।

এই বিষয়ে জানতে পঞ্চগড় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট সার্কেলের সহকারী কমিশনার ফাহাদ আল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই কলটি কেটে দেন। এরপর একাধিকবার চেষ্টা করলেও কলটি রিসিভ হয়নি। মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, কার্গো আটকে থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। সিএন্ডএফ এজেন্টদের পক্ষে থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শরীফ হোসেন জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছিলাম। তাদের কথা অনুযায়ী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই মুহূর্তে পণ্য আমদানি বন্ধ রেখেছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছেন পঞ্চগড় কাস্টমসের কর্মকর্তারা। দুই দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আগামী শনিবার বা রবিবারের মধ্যে ইতিবাচক সংবাদ আসতে পারে।

পঞ্চগড় আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান খান বাবলা বলেন, বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্টের পক্ষ থেকে আমাকে কিছু জানায়নি। ব্যক্তিগতভাবে আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিয়েছি। আপাতত দেশের সব বন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ আছে। এর আগে বুড়িমারী বন্দর দিয়ে রপ্তানি করতে চাওয়ায় চালুর ৫ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের তেমন কিছুই করার নেই, এটা পুরোপুরি সরকারি বিষয়। তারপরেও রপ্তানি কার্যক্রম যেন চালু করা যায়, সেই ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।

পঞ্চগড়ের আমদানি-রপ্তানিকারক ও পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক হারুন অর রশিদ বাবু বলেন, আমদানিতে যতটুকু রাজস্ব ঘাটতি হয়, রপ্তানি দিয়ে তা পূরণ হয়। রপ্তানি মানে যেহেতু পুরোটাই রাজস্ব, তাই আমদানির পাশাপাশি রপ্তানি জরুরি। নয়তো দেশের বাণিজ্য ও রিজার্ভ ঘাটতি বৃদ্ধি পাবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫