
করোনাকালে বন্যা দুর্গত জেলাগুলোর ৮০.৬ শতাংশ মানুষ খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল (জিআর) ও শতভাগ মানুষ নগদ আর্থিক সহায়তা পেয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে চলতি বছরের জুলাই মাসে দেশের ৩৭টি জেলা বন্যা কবলিত হয়।
গতকাল রবিবার সিপিডি, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে যৌথভাবে আয়োজিত ‘করোনা ও বন্যা মোকাবেলায় ত্রাণ কর্মসূচি ও কৃষি প্রণোদনা: সরকারি পরিষেবার কার্যকারিতা’ বিষয়ক এক ভার্চুয়াল সংলাপে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সংলাপের মাধ্যমে নেত্রকোণা ও হাওর অঞ্চলে করোনা ও সাম্প্রতিক বন্যা মোকাবেলায় ত্রাণ সহায়তা ও কৃষিখাতে প্রণোদনা বিতরণে সরকারি পরিষেবার কার্যকারিতার একটি প্রাথমিক মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মোস্তফা আমির সাব্বিহ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সিপিডির ওই গবেষণার জন্য নেত্রকোনা জেলাকে নির্বাচিত করা হয়। ওই জেলার তথ্য যাচাই-বাছাই করেই গবেষণা প্রস্তত করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
১২ থেকে ২৭ জুলাই- এই সময়ে বন্যায় নেত্রকোনা জেলার মোট ভূমির ৪৬ শতাংশ ও প্রায় ৫৯ শতাংশ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য বিতরণ করা হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে নগদ আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। সিপিডি বলছে, জেলা-উপজেলা উভয় পর্যায়ে সুষ্ঠুভাবে সুবিধাভোগী নির্বাচন ও তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিল।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গবেষণায় বলা হয়, গত বন্যায় দেশের ১৬০টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পানি বন্দি পরিবারের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৮টি।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বন্যায় ৩৭ জেলায় ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়। ওই সময় তলিয়ে যাওয়া জমির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন।
সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সংলাপে জাতীয় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। -বাসস