
ফাইল ছবি।
আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আগামী এক বছরের মধ্যে দেশে ১৫টি আইন প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার (৭ জুন) সংসদে সম্পূরক বাজেটের উপর আলোচনায় বিরোধীদলীয় সদস্যরা অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ টানার পর অর্থমন্ত্রী এই কথা বলেন।
এসময় তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারে কারা কার জড়িত, তাদের নাম আমার কাছে নেই। নামগুলো আমাদের দেন। কাজটি করলে আমাদের জন্য সহজ হবে। এখনো অনেকেই জেলে আছে। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেতো, এখন তেমন নেই। কারা টাকা নিয়ে যায়, লিস্ট আমার কাছে নেই।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই চাই, এগুলো বন্ধ করতে হবে। বন্ধ হচ্ছে। আগের মতো অবস্থা নেই। আগে সিমেন্টের নাম করে বালি আসতো। একটার নাম করে আরেকটা আসতো। আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং আগের মতো হয় না। একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলবো না। পত্রপত্রিকায় দেখতে পাই না।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আগামী ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে ১৫টি আইন দেখতে পারবেন। এগুলো বন্ধ করার জন্য। আমি নিজে জানি কীভাবে এগুলো হয়। কারা করে জানি না। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, ইনএফেকটিভ ম্যানেজমেন্টের জন্য এগুলো হয়। আমরা সংস্কারমুখী কাজ করবো। নতুন নতুন আইন করবো। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে দায় নিয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেবো। কোনো টলারেন্স নেই এখানে।’
এর আগে বিএনপি'র সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে পরিবারের হাতে ব্যাংক তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনগণের টাকার হরিলুট হচ্ছে। সংসদে ঋণ খেলাপির তালিকা দেওয়া হলো। ৩০০ জন। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হলো? বিদেশে ১ লাখ কোটি টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। ওভার আর আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যাচ্ছে। এর বাইরে হুন্ডির পরিমাণ ধরলে আল্লাহ মাবুদ জানেন কতো টাকা বিদেশে গেছে!’
জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আর্থিক খাতে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্ব সঠিক। কর্তৃত্ব দুর্বল। ব্যাংকে কর্তৃত্ব নেই। কর্তৃত্ব না থাকলে অবাধে এসব হবে। এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের টাকা নিচ্ছেন। টাকা নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ পাঠাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘দুদকের একটি অফিস কানাডায়, মালয়েশিয়ায়, অস্ট্রেলিয়ায় করুন। তাহলে দেখা যাবে কে কতো টাকা নিয়েছেন। পিকে হালদার এতো টাকা নিলো! নয় মিনিটের জন্য পিকে হালদারকে ধরতে পারেনি।’
জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত, আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্যাতিত এতিমদের মতো। দেখার কেউ নেই। লুটপাট হচ্ছে। দুর্নীতি হচ্ছে। কিছুই হয় না। শাস্তি হয় না।’