
ফাইল ছবি
দেশে তফসিলি ব্যাংকগুলোর জন্য চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ ‘ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণপূর্বক বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি’ ঘোষণা করেছে।
চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোকে বিতরণ করতে হবে ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করবে ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, মহামারি করোনা কারণে সৃষ্ট আর্থিক সংকট মোকাবিলায় এবং সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের প্রথম ও প্রধান তিনটি লক্ষ্য তথা দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পল্লী অঞ্চলে পর্যাপ্ত কৃষিঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ২০২১-২০২২ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত অর্থবছরে মোট ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ধরেছিল। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ শতাংশের মত।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোট ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ১৬৬ জন গত অর্থবছর কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৫ হাজার ৯৪৭ জন নারী পেয়েছেন ৯ হাজার ২৮৭ কোটি টাকার ঋণ।
২২ লাখ ৪৫ হাজার ৫১২ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা এবং চর ও হাওর অঞ্চলের মতো অনগ্রসর এলাকার ৭ হাজার ৭৯৬ জন কৃষক প্রায় ৩৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন।
কৃষকদের মধ্যে কৃষি ঋণ সহজলভ্য করতে নতুন নীতিমালা ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু বিষয় যোগ করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে-
সোনালী মুরগী পালনের জন্য ঋণ দেয়ার নিয়ম
মহিষ ও গাড়ল পালনের জন্য ঋণ দেয়ার নিয়ম
ফসলভিত্তিক ঋণদানের নিয়মে একর প্রতি ঋণসীমা কৃষকদের প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে ১৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি/হ্রাস করা
মাছ চাষের ঋণদানের নিয়মে একর প্রতি ঋণ সীমা বৃদ্ধি করা
ব্যাংকের মাধ্যরেম বিতরণ করা ঋণের তদারকি জোরদার করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহামারির সংকট মোকাবিলায় চলতি মূলধন ভিত্তিক কৃষি খাতে (মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাত) চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য গত অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছিল, যার মেয়াদ গত জুন মাসে শেষ হয়েছে। সেই স্কিমের আওতায় তফসিলি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪ হাজার ২৯৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় শস্য ও ফসল খাতে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের জন্য নেওয়া নেওয়া স্কিমের আওতায় মোট ৪ হাজার ৮৮০ কোটি ৭১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।