Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

করোনার মধ্যেও কুমিল্লা ইপিজেডে বেড়েছে রপ্তানি

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২১, ০৯:৫৫

করোনার মধ্যেও কুমিল্লা ইপিজেডে বেড়েছে রপ্তানি

কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা

করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা, বিভিন্ন শিফটে লাঞ্চের ব্যবস্থা করা, শ্রমিক-কর্মকর্তাদের কেউ অসুস্থ হলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা ও চাপে থাকলেও পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখার কারণে কুমিল্লা ইপিজেডে বেড়েছে রপ্তানি।

গত ২০২০-২০২১ অর্থবছর ও ২০২১-২০২২ অর্থবছরে কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (সিইপিজেড) থেকে রপ্তানি হয়েছে ৭৫১ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এরমধ্যে গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে রপ্তানি হয় ৫৬৫ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার ও ২০২১-২২ অর্থবছরের তিন মাসে হয় ১৮৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে।

কুমিল্লা ইপিজেড কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে কুমিল্লা ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানগুলো। রপ্তানি হয় ৪৯০ দশমিক সাত ছয় মিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৮ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়, রপ্তানি হয় ৪৬৪ দশমিক ৪০ ডলারের পণ্য। 

তাছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে বিনিয়োগ হয় ৬১ দশমিক ০২ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের তিন মাসে বিনিয়োগ হয় ১৫ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন ডলার। করোনায় থমকে থাকা সময়ে রেকর্ড পণ্য রপ্তানি হয় কুমিল্লা ইপিজেডে। এটাকে বিরাট সাফল্য হিসেবে মনে করছেন কুমিল্লা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ।

প্রধানত, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, শ্রীলঙ্কা ও জাপানে রপ্তানি হয় কুমিল্লা ইপিজেডের পণ্য। ২০০০ সালে ২৬৭ দশমিক ৪৬ একর ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা ইপিজেড। এখানে প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ৪৮টি। বর্তমানে মোট লোকবলের সংখ্যা ৪০ হাজার ১৮৩ জন। শ্রমিক ও কর্মকর্তা মিলিয়ে ৯৯ দশমিক চার শূন্য ভাগ লোকবলই বাংলাদেশের। যার মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ লোকবল কুমিল্লার। বাকিরা বিদেশি। যেখানে নারী লোকবলের সংখ্যা ৫৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ। পুরুষ লোকবলের সংখ্যা ৪০ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এদিকে সম্প্রতি আরও দুইটি প্রতিষ্ঠান ৫ হাজার শ্রমিক নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। এ অর্থবছরে কুমিল্লা ইপিজেডে লোকবলের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াতে পারে। তিন ক্যাটাগরি এ, বি ও সি তে ভাগ করা হয়েছে ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানগুলোকে। 'এ' ক্যাটাগরিতে রয়েছে ২৭টি প্রতিষ্ঠান। এই ২৭টি প্রতিষ্ঠান চলছে বিদেশি বিনিয়োগে। তাছাড়া দেশি-বিদেশি যৌথ বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠান ১৩টি ও শুধুমাত্র দেশি বিনিয়োগের প্রতিষ্ঠান আটটি। 

প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোকবল রয়েছে কাদেনা স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডে। এখানে লোকবল আছে ছয় হাজার ৯১৫ জন। চার হাজার ৬২৮ জন লোকবল আছে জিন শ্যাং সুজ (বিডি) লিমিটেডে, চার হাজার ৫৮০ জন লোকবল আছে সুরতি টেক্সটাইল লিমিটেডে, চার হাজার ৩১ জন লোকবল আছে গোল্ডেন শ্যাং সুজ (বিডি) লিমিটেডে। এগুলোর সবই 'এ' ক্যাটাগরির। রপ্তানিতে এ তিনটি প্রতিষ্ঠান খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে। 

পাশাপাশি ব্র্যান্ডিক্স ক্যাজুয়াল ওয়্যার (বিডি) লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটিও এ সময়ে রপ্তানিতে সাফল্য পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে লোকবল আছে দুই হাজার ৬৫৭ জন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা ইপিজেড থেকে রপ্তানিকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উপরের সারিতে আছে তৈরি পোশাক। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। বিনিয়োগের দিক থেকে এককভাবে সবার উপরের সারিতে রয়েছে চীন। কুমিল্লা ইপিজেডে তৈরি পোশাক, জুতা, ইয়ার্ন, ফেব্রিক্স, টেক্সটাইল ডাইজ ও অক্সিলিয়ারিস, গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ, সোফা কাভার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, প্লাস্টিক পণ্য, মেডিসিন বক্স, ক্যামেরা ব্যাগ, কম্পিউটার ব্যাগ, হেয়ার অ্যাক্সেসরিজ, স্পোর্টস ওয়্যার ইত্যাদি উৎপাদন  হয়ে থাকে।

কুমিল্লা ইপিজেডের কর্মীদের সেবার জন্য সম্প্রতি একটি হেলথ সেন্টারও স্থাপন করা হয়েছে। 

এদিকে কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগ, রপ্তানি, স্বাস্থ্যসেবার মান ও লোকবল বাড়লেও গত ২১ বছরেও সম্প্রসারিত হয়নি ইপিজেড অঞ্চল।

এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছে, যে পরিমাণ চাহিদা আছে, তার থেকে ২০০ একর জায়গা কম আছে কুমিল্লা ইপিজেডে। বিনিয়োগকারী বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে ব্যাপক আগ্রহী হলেও তাদের নতুন করে প্লট বরাদ্দ দেয়া যাচ্ছে না। জায়গা সম্প্রসারিত করে নতুন প্লট বরাদ্দ দেয়া গেলে নতুন করে ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে কুমিল্লা ইপিজেডে। যার সুবিধাভোগী হবেন প্রধানত কুমিল্লার নারীরা। 

কিন্তু কুমিল্লা ইপিজেডকে ঘিরে আশেপাশে একের পর এক বহুতল ভবন করা হচ্ছে। যার কারণে ভবিষ্যতে জায়গা সম্প্রসারণ দুরূহ হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন ইপিজেড সংশ্লিষ্টরা। এদিকে শ্রমিকদের জন্য ভালো আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টরা কুমিল্লা ইপিজেডে আসতে অনাগ্রহ দেখান। 

আবার কুমিল্লায় স্থানীয় পর্যায়ে যে ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তা ইপিজেডে কাজ করার জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান নিজেরাই কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন ও নিয়োগ দিচ্ছেন। এতে প্রচুর সময় ব্যয় হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ে উৎপাদনে। ইপিজেডের বাইরে কুমিল্লায় বলার মতো আর তেমন বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই। এ কারণেও দক্ষ লোকবলের সংকটে ভুগতে হয় বলে মনে করেন কুমিল্লা ইপিজেড সংশ্লিষ্টরা। দক্ষ লোকবল বাড়ানো গেলে রপ্তানি আরও বাড়বে।

ইপিজেডের পাশের সড়কগুলোতে যানজট ও কারখানাগুলোর আলাদা বাহন না থাকায় দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে ইপিজেডের কর্মীদের। যানজটের কারণে পণ্য ডেলিভারির ক্ষেত্রেও সময়ক্ষেপণ হয়। 

কুমিল্লা ইপিজেড সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মুখিয়ে আছেন কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগের জন্য। কিন্তু জায়গার অভাবে প্লট বরাদ্দ দেয়া যাচ্ছে না। এদিকে ইপিজেডের চারদিকে যে পরিবেশ, তাতে ভবিষ্যতে জায়গা বাড়ানো নিয়েও শঙ্কা আছে। জায়গা বাড়িয়ে নতুন প্লট বরাদ্দ দেওয়া গেলে আরো অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হতো। রপ্তানি আয়ও বেড়ে যেতো।

এ বিষয়ে কুমিল্লা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, জায়গা সম্প্রসারণ ও কুমিল্লায় নতুন করে ইপিজেড করার পরিকল্পনা বেপজার হাতে নেই। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুসারেই এগুলো বাস্তবায়ন হয়। 

করোনার মধ্যেও রপ্তানি বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, করোনাকালীন সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠান চালু রেখেছি। এসময়ে বিনিয়োগ, উৎপাদন, রপ্তানি সব বেড়েছে। এটা ইতিবাচক দিক। -বাসস            


মিশরে প্রথমবারের মতো শপথ নিলেন প্রায় ১০০ নারী বিচারক 

প্রথমবারের মতো মিশরের প্রশাসনিক বিচারিক আদালত স্ট্রেট কাউন্সিলের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ৯৮ জন নারী। গত মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানী কায়রোতে প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ হোসাম আল দীনের কাছে তারা শপথ গ্রহণ করেন। 

প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি নারীদের স্ট্রেট কাউন্সিল ও পাবলিক প্রসিকিউশনে যোগদানের আহ্বান জানানোর কয়েকমাসের মধ্যে তারা শপথ গ্রহণ করেন। 

এর আগে বিচার বিভাগে পুরুষদের একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। গত কয়েক বছরে নারীরা স্টেট কাউন্সিলের এই অবস্থানের বিরোধিতা করেছেন। নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগও করেছেন তারা।

নতুন বিচারকদের স্বাগত জানিয়ে হোসাম আল দীন বলেন, তারা স্ট্রেট কাউন্সিলে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।

কয়েকজন বিচারক তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, অবশেষে তাদের স্বপ্ন সত্যি হওয়ায় খুব খুশি। শপথ নেয়া রাদয়া হেলমি বলেন, এটি আমাদের ও আগের প্রজন্মের জন্য একটি স্বপ্ন পূরণের দিন। মিশর ও আরব বিশ্বের দেশগুলোতে বিচার ব্যবস্থার অন্যতম সদস্য হওয়া তার স্বপ্ন ছিল।

গত মার্চ মাসে নারী বিচারক নিয়োগের বিষয়ে সিসির সিদ্ধান্তকে প্রশংসা করেন নারী অধিকার কর্মীরা। মিশরের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর উইমেন সে সময় জানায়, এই পদক্ষেপ নারীদের আরও বেশি রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ইচ্ছার প্রতিনিধিত্ব করবে।

স্টেট কাউন্সিলের নারী সদস্যদের প্রথম ব্যাচে আছেন ৪৮ জন বিচারক, যারা অ্যাসিসটেন্ট কাউন্সিলর হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন। আর ৫০ জন নারী নিয়োগ পেয়েছেন ভাইস-কাউন্সিলর হিসাবে। -বাসস


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫