Logo
×

Follow Us

অর্থনীতি

আতঙ্কে ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলেছেন ব্যাংক গ্রাহকরা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:০৭

আতঙ্কে ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলেছেন ব্যাংক গ্রাহকরা

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। ছবি: সংগৃহীত

একটি গোষ্ঠী দেশের অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেছেন, ব্যাংকে টাকা নেই, রাখলে পাওয়া যাবে না এমন সব গুজব ছাড়ানো হয়েছে। তাই আতঙ্কে গ্রাহকেরা ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। তবে সবাই ভুল বুঝতে পারায় এখন আবারো তা ফেরত আসতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

গতকাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের শেষদিন ‘ইকোনোমিক পলিসি: অ্যাড্রেসিং পোস্ট কভিড চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক আলোচনায় গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, ‘ব্যাংকে টাকা নেই, এটা বলার পরে সত্যিকারের একটা ইমপ্যাক্ট হয়েছিল। প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা মানুষ উইথড্র করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু তাতে বাধা দেয়নি। এখন সবাই টের পেয়েছে, আরে! এটা তো ভুল করেছি। এখন সবাই টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছে। আপনারা খোঁজ নিয়ে দ্যাখেন। এখন কিন্তু সবাই আবার ফেরত দিচ্ছে।’

সরকারের বিনিয়োগ নিয়ে ওঠা সমালোচনার প্রসঙ্গে মুখ্য সচিব বলেন, লার্জ স্কেল ইনভেস্টমেন্ট থেকে সরকার সরে এসেছে বলে একটি প্রসঙ্গ আলোচনায় এসেছে। কথাটি পুরোপুরি সঠিক নয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে লার্জ স্কেল ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন সেটি হচ্ছে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায়োরিটি নির্ধারণ করা। প্রায়োরিটি অনুযায়ী কাজ করা, যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ দ্রুত শেষ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা। লার্জ স্কেল ইনভেস্টমেন্ট থেকে বাংলাদেশ কখনো সরেনি, এখনো সরবে না।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। তিনি বলেন, আমার বাড়িতে যে মালির কাজ করে তার এক টাকা এবং আমার এক টাকা মূল্য একই। এক্সচেঞ্জ রেটের ক্ষেত্রেও যেই আয় করুক বা খরচ করুক তার মূল্য একই। সেখানে একাধিক মূল্য নির্ধারণ করা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত।

তিনি বলেন, টাকা যদি ওভারভ্যালু হয়, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেটা এক্সপোর্টের বিরুদ্ধে চলে যায়। যদি এক্সপোর্ট নেট গ্রোথ বা ট্রেড নেট গ্রোথের দিকে আমরা যায় তাহলে ওইদিকটায় আমাদের খেয়াল করতে হবে। এক্সচেঞ্জ রেট প্রত্যেক দুই মাস পরে বদলানোও ঠিক হবে না।

তিনি আরো বলেন, ইন্টারেস্ট রেটে একসময় অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল এবং  ব্যাংকগুলো যখন সুপার প্রফিট করছিলো সেটা বিজনেসের জন্য খারাপ ছিল। ফলে তখন একটা ইন্টারেস্ট রেট বেধে দেয়া হয়। তাহলে প্রশ্ন হলো শর্ট টার্ম ইন্টারেস্ট রেট কীভাবে ঠিক করা হয়। তার মানে, এটা করতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো বেশি মানি ইনজেক্ট করছে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশি মানি ইনজেক্ট করা মানে তারা মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতেও ফুয়েল দিচ্ছে। সাবসিডিকে যদি ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে দেখা হয়, তাহলে এটা ডিসরেসপেক্টফুল অ্যাটিটিউডের দিকে চলে যায়। সাবসিডিকে বিজনেস সাপোর্ট বললে ভালো হয়।

তিনি বলেন, সরকার যে ভর্তুকি দিচ্ছে সেটা সঠিক জায়গায় যাচ্ছে কিনা বা সঠিক উদ্দেশ্য সম্পাদন করছে কিনা সেটাও দেখতে হবে। অর্থনীতির বিচারে এটাও গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী,প্যানেলিস্ট হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মামুন আল রশিদ, ইআরডি’র সচিব শরিফা খান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। আলোচনায় মডারেটর হিসেবে ছিলেন বিআইডিএসের পরিচালক বিনায়ক সেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫