
বাংলাদেশ ব্যাংক। ছবি- সাম্প্রতিক দেশকাল
গত ৬ নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (আকু) সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের আমদানি বিল বাবদ ১২১ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ। এর ফলে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে। তবে রিজার্ভের পতন কিছুটা ঠেকানো গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আইএমএফের বিপিএম-৬ ম্যাথডের ভিত্তিতে ৮ নভেম্বর গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে এখন গ্রস রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন তথ্য বলছে, গত ১ নভেম্বর গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার। বুধবার (৮ নভেম্বর) এটি বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫১ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত সাত দিনে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ বেড়েছে ৯ কোটি ডলার।
তবে এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রিজার্ভ পতনের যে ধারাবাহিকতা ছিল, সেখানে গতি কিছুটা কমেছে। এতে খুশি হওয়ার কিছু নেই। রিজার্ভে এই সামান্য বৃদ্ধিতে উচ্ছ্বসিত হওয়ারও কিছু নেই। কারণ, সামনে প্রচুর পরিমাণে রিজার্ভ খরচ করতে হবে। আমদানির দায় পরিশোধ ছাড়াও বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, রিজার্ভ এখন ২ হাজার ৭৮ কোটি ডলার। এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ১ নভেম্বর এটি ছিল ২ হাজার ৬৬ কোটি ডলার। এই হিসাবে গত সাত দিনে নেট রিজার্ভ বেড়েছে ১২ কোটি ডলার। অবশ্য প্রকৃত নেট রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের নিচে বলে জানা গেছে। প্রকৃত রিজার্ভের এ তথ্য কেবল আইএমএফকে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে গত এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২২ সালের ৮ নভেম্বর গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৪২৪ কোটি ডলার।
রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি নিয়ন্ত্রণ ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ রিজার্ভ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রিজার্ভ বাড়ানোর অন্যতম উপাদান প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহে যে পতন দেখা যাচ্ছিল-অক্টোবর মাসে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অক্টোবরে দেশের রেমিট্যান্স বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলারে। এছাড়া চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেও প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে।