Logo
×

Follow Us

ক্যাম্পাস

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

Icon

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:১০

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে যৌন নিপীড়ন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে একই ইনস্টিটিউটের শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর হল বিষয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য গেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।

গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর এই অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। পরে উপাচার্য অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্ত করবেন বলে ভুক্তভোগীকে জানান। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম নুরুল ইসলাম। তিনি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষার্থী। গত ১১ সেপ্টেম্বর হল বিষয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য ইনস্টিটিউটের অফিস কক্ষের সামনে গেলে তিনি আমাকে নিজ থেকে তার কক্ষে ডাকেন। তখন আমি স্যারের কক্ষে যাই। স্যার আমাকে প্রয়োজনীয় দু’একটা কথা বলার পরপরই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শুরু করেন। তিনি আমাকে নানারকমের সাহায্যের প্রলোভন দেখান এবং আমাকে বলতে থাকেন আমি যেন একা তার সঙ্গে দেখা করি এবং বই নেই তার কাছে গিয়ে। তাছাড়া তার বিষয়ে বা তার সাহায্যের বিষয়ে যেন কাউকে কোনো কথা না বলি।

তিনি আমার ফোন নম্বর নেন এবং এক রকম জোর করেই আমার মেসেঞ্জারে নক করেন এবং যুক্ত হোন। তার কথার ধরন এবং অঙ্গভঙ্গি আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়াই এবং তখন তিনি নিজেও তার নিজ আসন ছেড়ে আমার কাছে উঠে আসেন এবং আমাকে যৌন নিপীড়ন করেন। তিনি বার বার বলতে থাকেন, তোমাকে আমার ভালো লেগেছে। তিনি আমার শরীরের আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করেন। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে উঠতে না পেরে আমি ভয়ে তার কক্ষ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই।

অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, এ ঘটনার সময় আমাকে তার রুমে থেকে এবং বের হয়ে যাওয়ার সময় সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থী দেখেছেন। এরপর আমি এতটাই ভয় পাই যে, মেসে ফিরে যাওয়ার শক্তিও পাচ্ছিলাম না, তাই আমি ক্যান্টিনে কিছু সময় অবস্থান করি। কিছু সময় পর আমাকে পুনরায় ফোন করে তার সঙ্গে দুপুরের খাবার অথবা হালকা নাশতা বা চা খাওয়ার প্রস্তাব জানান। তখনও আমাকে বারবার এই বিষয়ে যেন কাউকে না জানাই, তা সাবধান করতে থাকেন। আমি মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে প্রচণ্ড ভয়ে গ্রামের বাসায় চলে যাই। যার কারণে আমি আমার চলমান পাঠদান থেকে বিরত থাকি। এমন সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, নিজ ইনস্টিটিউটে সাধারণত সবাই নিরাপদ থাকে। তাই স্যার যখন ইনস্টিটিউটে নিজ কক্ষে আমাকে ডাকেন তখন আমি যাই। এরপর উনার কথা অসংলগ্ন লাগলে আমি চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াই। কিন্তু উনি দ্রুত চেয়ার থেকে উঠে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। আমি সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যাই। এরপর উনি ফোন দেয় আমি যেন ঘটনাটি কাউকে না বলি। আমি আজকে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।

অভিযোগ দিতে দেরি হওয়ার কারণ সম্পর্কে ছাত্রী বলেন, ঘটনার পর মানসিক ট্রমা থেকে বের হতে না পেরে আমি গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। তাই লিখিত অভিযোগ দিতে দেরি হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমি একটি লিখিত অভিযোপত্র পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত কমিটি করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসেও এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল। এর আগে ২০১৪ সালে মে মাসেও এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ছিল ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫