বশেমুরবিপ্রবিতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের দাবি
‘ভিসি নাসির উদ্দিনের পদত্যাগই একমাত্র সমাধান’

প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:২১

বশেমুরবিপ্রবিতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অপসারণের এক দফা এক দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের চলমান রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় আন্দোলনের
৬ষ্ঠ দিনে সংবাদ সম্মেলন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ভিসি'র
বিরুদ্ধে ১৪টি বিষয়ে অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে
ভিসি নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগই এর একমাত্র সমাধান। বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে
অভিযোগগুলো হলো: বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল নির্মাণ কাজ শরুর আগেই আড়াই কোটি টাকা নির্মাণ
ব্যয় দেখানো, তুচ্ছ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের শোকজসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অন্যায়ভাবে
৮ জনকে বহিষ্কার, তুচ্ছ বিষয়ে অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান ও গালিগালাজ, ভিসি কোটার নামে
ভর্তি-বাণিজ্য ও জালিয়াতি, মাত্রাতিরিক্ত ভর্তি-ফি ও সেমিস্টার-ফি, উন্নয়নমূলক কাজে
তীব্র অনীহার কারণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ক্যাফেটেরিয়া, অডিটোরিয়াম বা টিএসসি’র মতো কোন অবকাঠামো তৈরী না করা, বৃক্ষরোপণ ও গোবর
বাণিজ্য, চাকরির প্রলোভন দিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে খাটো করে
দেখা, ১৫ আগস্ট সঠিকভাবে পালন না করা, এখতিয়ার বহির্ভূত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা, মেধাবীদের
বাদ দিয়ে ইউজিসি’র নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়ানো ও অধিকতর কম সিজিপিএ-ধারীদের নিয়োগ দেয়া।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ
বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা আরও বলেছে, পরিপূর্ণ দুর্ণীতিতে নিমজ্জিত স্বৈরাচারী উপাচার্যের
নৈতিক স্খলন চরম পর্যায়ে চলে গেছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশকে চরমভাবে বিষাক্ত
করে তুলেছে। উপাচার্যের বন্দি জিঞ্জির থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন
চালিয়ে গেলেও এ আন্দোলন বানচালের জন্য উপাচার্য নাসিরউদ্দিন সর্বক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে
যাচ্ছেন। ভিসিপন্থী লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদেরকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে সোমবার রাত
১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক, যিনি আন্দোলনত শিক্ষার্থীদের
উপর হামলার প্রতিবাদে ৪ দিন আগে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন সেই শিক্ষক মোঃ হুয়ায়ুন কবির গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ
ডায়েরী করেছেন।
তিনি জানান, তার
নাম Humayun
Kabir দিয়ে ভিসিপন্থী
অজ্ঞাত ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা ফেইসবুক আইডি খুলে বিভিন্ন ধরণের উষ্কানিমূলক, চারিত্রিক
ও মান-হানিকর খারাপ স্ট্যাটাস দিচ্ছে এবং অপপ্রচার করে বেড়াচ্ছে। তারা তাকে নানা ভয়ভীতিসহ
প্রাণ নাশের হুমকিও দিয়েছে। ভিসিপন্থীরা তার বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে বলে তিনি আশংকা
ব্যক্ত করেছেন।
একই সময়ে গোপালগঞ্জ
থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৩য় বর্ষের
ছাত্রী মিরা খাতুন। তার অভিযোগে জানা গেছে, গত শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর
হামলা চলাকালীন কয়েকজন উশৃংখল যুবক তাকে আজেবাজে কথা বলে হুমকি দেয়। পরদিন রবিবার সন্ধ্যার
দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখভাগে সোবহান সড়কের মুখে তারা তার উপর হামলা চালায় এবং শ্লীলতাহানির
চেষ্টা করে। এসময় তার বন্ধু পিয়াস বাধা দিতে গেলে তাকে বেধরক মারপিট করে রক্তাক্ত জখম
করে। এরপর তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা
প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। গুরুতর আহত পিয়াস গোপালগঞ্জ আড়াই’শ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।