চাঁদপুর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৪

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতার
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতার ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর মো. আবদুল হাই (অব.) চাঁদপুর ছেড়ে অজ্ঞাতবাস করছেন। তবে অজ্ঞাতবাসে থাকলেও নিয়মিত চেক সই করে যাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে নানা অনিয়ম ও ব্যর্থতার অভিযোগে তাদের পদত্যাগের দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা।
বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান প্রফেসর ড. মো. নাছিম আখতার। পরবর্তী সময়ে নিজের আস্থাভাজন আবদুল হাইকে কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিয়োগ দেন রেজিস্ট্রার পদে। আবার তাকেই দেওয়া হয় অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব। এই দুইজন মিলে গত প্রায় চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরনের অপকর্মে জড়িত ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় উপাচার্য নাছিম শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান এবং ব্যানার ছুড়ে ফেলেন।
শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত রয়েছেন ভিসি ও রেজিস্ট্রার। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দুইজনের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে ভিসি এবং রেজিস্ট্রার ঢাকায় থেকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছেন। এরমধ্যে নিজের আস্থাভাজন একাধিক শিক্ষককে প্রমোশন ও অন্যান্য পদ-পদবির লোভ দেখিয়ে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছেন। এছাড়া নিয়মিত চেকও সই করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসে সকল কার্যক্রম বন্ধ। সকল ফাইল ক্যাম্পাসে। তবে এই অবস্থার ভেতরেও ভিসি ও রেজিস্ট্রার স্যার অজ্ঞাতস্থানে থেকে একাধিক চেক সই করেছেন। আমাদের অ্যাকাউন্টেও টাকা ঢুকেছে। তবে কীসের টাকা সেই বিষয়ে জানতে চাইলে আমাদের মুঠোবার্তায় জানানো হয়েছে, বেতনের টাকা দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ভিসি ও রেজিস্ট্রার শেখ হাসিনার পতনের পর ক্যাম্পাসমুখী হননি। তবে তারা ঢাকায় থেকে অফিস করতে চান। তারা না থাকলে আমরা বিপদে পড়ব; এমন ভয়ও আমাদের দেখানো হয়েছে। এছাড়া অ্যাডহকে লোক নিয়োগ দেওয়ার কথাও বলেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, আমাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, কীসের টাকা ঢুকেছে আমরা তা জানি না, বেতন বিলে আমাদের সই ছাড়া কীভাবে বেতন ঢুকল সেটিও আমরা বুঝতে পারছি না। ভিসির আস্থাভাজন রেজিস্ট্রারকেই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। তারা অজ্ঞাত স্থানে থেকে কত টাকার চেক সই করছেন তা আমাদের ধারণার বাইরে। তিনি পদে থাকার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের মাধ্যমে কাউকে প্রলোভন আবার কাউকে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। তবে আমরা সব শিক্ষার্থী ভিসির পদত্যাগের দাবিতে অনড়। তার পদত্যাগের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। তিনি পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না। তার পদত্যাগের দাবিতে শুক্রবারও আমরা ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধন করেছি।
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য নাছিম ও রেজিস্ট্রার আবদুল হাইয়ের মোবাইলে কল দেয়া হলে তাদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।