ছাত্রী হেনস্তার অভিযোগে জবি শিক্ষার্থীদের ১২ বাস আটক

জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:৫৬

ভিক্টর পরিবহনের বাস আটকে রাখেন জবি শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে সদরঘাটগামী ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের ১২টি বাস আটক করে রেখেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসব বাস আটকে রাখেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৪ অক্টোবর গুলিস্তানে হাফ পাস নিয়ে তর্ক-বিতর্কের সময় হেনস্তার শিকার হন জবি শিক্ষার্থী জান্নাত এশা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার হেনস্তার ঘটনাটি বিস্তারিত লিখে পোস্ট করেন। পোস্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এর প্রতিবাদে পরিবহনটির বাস আটকে রেখেছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. রাকিব বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভিক্টর ক্লাসিকের নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ শুনছি। কিন্তু গতদিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ব্যাচের এক ছাত্রীকে ভিক্টর ক্লাসিক বাসে হেনস্তা করা হয়। সেজন্য আমরা আজ শনিবার ওদের ১০ থেকে ১২টি বাস আটকে রেখে ওদের বলেছি তোমাদের ম্যানেজার বা মালিককে আসতে বল, আমরা কথা বলব। তারা এসেছেন, আমরা কথা বলছি তাদের সঙ্গে।
ফেসবুকে জান্নাত এশা লেখেন, গত ১৪ অক্টোবর আমি নতুন বাজার (বাঁশতলা) থেকে ভিক্টর ক্লাসিক বাসে উঠি। আমার সঙ্গে আমার ছোট বোন ছিল। কিছুক্ষণ পর হেলপার ভাড়া চাইতে এলে আমি সদরঘাটের ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে দিই। আর বলি যে, লাস্ট স্টপেজে নামব। তখন সে বলে, এটা গুলিস্তান পর্যন্ত যাবে। আমি বললাম, তাহলে টাকা ফেরত দিন। তখন শুরু হয় ঝামেলা। তার মতে নতুনবাজার থেকে গুলিস্তান বা সদরঘাট দুই জায়গার ভাড়া একই।
পরে বললাম, আমি স্টুডেন্ট হাফ ভাড়া কাটেন। তাদের নাকি আবার হাফ ভাড়া কাটারও সিস্টেম নেই। এরপর বললাম, গুলিস্তান থেকে অন্য ভিক্টরে উঠলে জনপ্রতি ১০ টাকা করে নেবে। ওই টাকা ফেরত দিন। আর আমি জগন্নাথের স্টুডেন্ট। আপনারা তো ঘুরে ওখানেই আসবেন। তখন দেখব, আপনারা স্টুডেন্ট ভাড়া কাটেন কি না। তখন চালক বলেন, এরা বহু ঝামেলা করে ‘ধইরা নামায় দে’।
এশার ভাষ্য, আমি চিল্লাচিল্লি করি যে, হাফ ভাড়া কাটেন। নইলে গুলিস্তান পর্যন্ত ২০ টাকা করে রাখেন। পরে সামনের দিকে এক লোক বলেন, ঠিকই তো আপনি স্টুডেন্ট ভাড়া কাটেন, নইলে টাকা ফেরত দিন। পরে সবার চিল্লাচিল্লিতে হেলপার ১০ টাকা ফেরত দিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কথা বলতে ভিক্টর ক্লাসিক বাসের মালিক পক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাটি শোনা মাত্রই আমরা বাস মালিকদের ডেকেছি। বাসে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা এটিই প্রথম নয়, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি যেন পরবর্তীতে আর কোনো শিক্ষার্থী এ ঘটনার সম্মুখীন না হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, ‘ঘটনাটি জেনেছি। তাদের ডাকা হয়েছে।’