মাদকবিরোধী অভিযান
জাবি প্রক্টরকে অতি-প্রতিক্রিয়াশীল আখ্যা বামপন্থী শিক্ষকদের

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৩

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
মাদকবিরোধী শক্ত অবস্থান ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে অতি-প্রতিক্রিয়াশীল আখ্যা দিলেন বামপন্থী ১০ শিক্ষক। এক লিখিত বিবৃতিতে শিক্ষকরা এই মন্তব্য করেন।
গতকাল শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ওই দশ শিক্ষকের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আমাদের সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আমরা অন্তত দুই মাস আগে প্রজ্ঞাপন, হলের কক্ষগুলোতে নোটিশ বিলি, বিভিন্ন স্থানে সতর্কতামূলক ব্যানার টানিয়ে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবন ও বহন করা যাবে না। যদি কেউ করে তাহলে শৃঙ্খলাবিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বামপন্থী ১০ শিক্ষকের প্রতিক্রিয়া প্রক্টরিয়াল বডির কাজে বাধা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের শ্রদ্ধেয় সহকর্মীরা কী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে সেটা বিচারের ভার আপনাদের উপর, দেশবাসীর উপর।
এর আগে, গত ১৭ জানুয়ারি গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেসরিলিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষক থার্টি ফার্স্ট নাইটে প্রক্টরিয়াল টিমের অভিযানে মদ্যপানরত অবস্থায় কয়েক শিক্ষার্থীকে আটকের ঘটনায় প্রশাসনকে অতি-প্রতিক্রিয়াশীল আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সেই প্রেস রিলিজে তারা উল্লেখ করেন, ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানের নামে শিক্ষার্থীদের চলাফেরা ও ব্যক্তিস্বাধীনতার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিবা-রাত্রির যেকোনো সময় সকল শিক্ষার্থীর নিরাপদ অবস্থান ও চলাফেরা নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। নিরাপত্তা বিধানের নামে শিক্ষার্থীদের চলাফেরা ও হলের বাইরে অবস্থান করার সময়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ব্যক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তার অধিকার ক্ষুণ্ণ করার শামিল।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ধর্ম বিশ্বাসের ভিন্নতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে উপেক্ষা করে’ ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থীকে মদ্যপানের অভিযোগে আটক এবং কোনো তদন্ত ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও পত্রিকায় তাদের ছবি ও নাম প্রকাশ করার মাধ্যমে প্রক্টরিয়াল টিম তাদের ‘অতি-প্রতিক্রিয়াশীল, অসংবেদনশীল মানসিকতা’ প্রদর্শন করেছে, যা নিন্দাযোগ্য।
তারা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের এহেন মোরাল পুলিশিং বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা ঢাকবার অপপ্রয়াস।
বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকরা হলেন- স্বাধীন সেন, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, এএসএম আনোয়ারুল্লাহ ভুঁইয়া, রায়হান রাইন, আইনুন নাহার, শরমিন্দ নীলোর্মি, সৈয়দ নিজার আলম, ধীমান সরকার ও মাহমুদা আকন্দ।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ৩১ ডিসেম্বর রাতে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আগে থেকেই দিকনির্দেশনামূলক নোটিশ প্রদান করা হয়। তবুও সেদিন ক্যাম্পাসের দুই জায়গায়- মাদক বহন ও সেবনের ঘটনা দেখা যায়। ক্যাম্পাসের বাহির থেকে অতিথি এনে নির্জনে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ঘটনাও ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক বিধি মোতাবেক পদক্ষেপ নিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি।