Logo
×

Follow Us

ক্যাম্পাস

বরিশালে অনলাইন ক্লাস বন্ধের দাবিতে অনলাইনেই আন্দোলন

Icon

বরিশাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২০, ২০:০১

বরিশালে অনলাইন ক্লাস বন্ধের দাবিতে অনলাইনেই আন্দোলন

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) এর একাডেমিক কার্যক্রম। দীর্ঘ এই বন্ধের প্রভাব যাতে শিক্ষার্থীদের উপর না পড়ে সে জন্য চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ববিতে পরীক্ষামুলকভাবে শুরু হয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম।

তবে শুরু থেকেই এই কার্যক্রমের বিরোধিতা করছে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে অনলাইনেই অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার হয়ে ওঠেন তারা।

এমনকি গত সোমবার রাতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হতে শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে এই কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়ে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি প্রেরণ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বিরোধী নানা মন্তব্য ছড়িয়ে দিয়ে এক ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। যে প্রতিবাদে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকালে দুপুরে সাম্প্রতিক দেশকালকে স্মারকলিপি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম বাতিল আন্দোলনের উদ্যোক্তা মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলিসা মুনতাজ।

তিনি জানান, ৩০ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষামূলক অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

অথচ, অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালানোর জন্য যে প্রযুক্তিগত অবকাঠামো এবং উচ্চগতি সম্পন্ন নেটওয়ার্ক প্রয়োজন তা গ্রামে বসবাসরত অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের নাগালের বাইরে। ফলত অনলাইন শিক্ষা-কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসরত শিক্ষার্থী ভাই ও বোনেদের জন্য চরম বৈষম্যমূলক।

তিনি আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি করছে এটা পরীক্ষামূলক কার্যক্রম এবং কোন প্রকার পরীক্ষা গ্রহণ বা নম্বর প্রদানের আয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়। অথচ এরিমধ্যে অনেক শিক্ষক এসাইনমেন্ট নেয়া শুরু করেছেন, যেটা পরীক্ষামূলক শিক্ষা-কার্যক্রমের সাথে সাংঘর্ষিক।

কারণ প্রতিটি বিষয়ের এসাইনমেন্ট ওই বিষয়ের সম্পূর্ণ নম্বরের ১০-১৫ শতাংশ অংশে প্রভাব ফেলে। নেটওয়ার্ক ও স্মার্ট ডিভাইসের অভাব এবং বইপত্র বরিশাল রেখে আসার কারণে যারা বাড়িতে বসে এসাইনমেন্ট জমা দিতে পারছে না এই সিদ্ধান্তে তাদের শিক্ষা জীবনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, এই বৈশ্বিক মহামারী শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়াটাও সবসময় সহজ হচ্ছে না। যে কারণে এই মুহূর্তে এমন মানসিক চাপের মধ্যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারাটা বাস্তবসম্মত নয়।

এসব বিষয় তুলে ধরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উপাচার্যের কাছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করার আহবান জানান। এছাড়া বর্তমান করোনা সংকটে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া শিক্ষার্থীদের সাহায্যার্থে একজন কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট নিয়োগের দাবিও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাদেকুল আরেফিন এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এরিমধ্যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছেন। তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করেছেন। তবে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫