Logo
×

Follow Us

ক্যাম্পাস

কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হলেন চুয়েটের হযরত আলী

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১৮:০১

কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হলেন চুয়েটের হযরত আলী

অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল

কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হলেন চুয়েটের হযরত আলীশিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) উপাচার্যকে অপসারণের পাঁচ দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন মো. হযরত আলী যিনি এতদিন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তবে তিনি পূর্ণকালীন নয়, অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য (ভিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, যিনি কেবল রুটিন কাজ করবেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ বলা হয়, “কুয়েট আইন ১০(১) ও ১০(৩) ধারা অনুযায়ী পূর্ণকালীন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ড. হযরত আলী অন্তর্বর্তী ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই সময়ে তিনি রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।”

পূর্ণকালীন উপাচার্য কবে নিয়োগ দেওয়া হবে, সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু বলা হয়নি।

ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য (প্রোভিসি) ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনকে ‘লাল কার্ড’ দেখান শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য (প্রোভিসি) হিসেবে ড. শেখ শরীফুল আলম নিয়োগ পান। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল তাদেরকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থার মধ্যে ১৪ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম ৪ মে ও আবাসিক হলগুলো ২ মে খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়।

সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরদিন ১৫ এপ্রিল দুপুরে একের পর এক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। সেইসঙ্গে, উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন।

এই আন্দোলন ঢাকাতেও ছড়ায়। কুয়েট উপাচার্যে পদত্যাগ দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবস্থান নেয় একদল শিক্ষার্থী।

ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যে উপাচার্য​ মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।​​

গত ২১ এপ্রিল বিকেলে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনশন শুরু করেন কুয়েটের ৩২ শিক্ষার্থী। এর তিন দিনের মাথায় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শীর্ষ পদে রদবদলের মধ্যে কুয়েটে নিয়োগ পান ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য (প্রোভিসি) ড. শেখ শরীফুল আলম।

গত বছরের ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম কোনো উপাচার্যকে দায়িত্ব ছাড়তে হলো।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫