
বুধবার যমুনার পাশে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার পাশে কাকরাইল মোড়ে সড়কে দিন-রাত অবস্থান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, কাকরাইল মোড়ে রাস্তায় কেউ বসে আছে, কেউ শুয়ে আছে। কেউ গান গাইছে, আবার কেউ হাততালি দিয়ে অন্যদের উজ্জীবিত রাখছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাকরিম আহমেদ বলেন, “গতকাল দুপুর থেকে আমরা এখানে আছি। রাতটাও এখানেই কাটিয়েছি।”
বুধবার সকাল ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ শুরু হয়। গুলিস্তান, মৎস্য ভবন হয়ে কাকরাইল মোড়ে আসার পর পৌনে ১টার দিকে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে এ সময় ভিড় থেকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান ওঠে এবং একজন তার দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারেন।
রাত ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুল আরেফিন।
তিনি বলেন, “উপদেষ্টা মহোদয় যখন ব্রিফ করছিলেন তখন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায়। জবি শিক্ষার্থীরা মনে করে, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা দায়ী নই। আমরা এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি, তবে এর দায় সরকারকে-ই নিতে হবে।
“আমাদের দাবি যদি মেনে নেওয়া হতো, তাহলে আমরা এখানে আসতাম না, আর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতো না।”
ছাত্রদলের ওই নেতা আরও বলেন, “এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে যখন উপদেষ্টা চলে যান, তাতে মনে হয়, তিনি ব্যক্তিগত ক্ষোভকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আমরা তার ব্যক্তিগত ক্ষোভকে প্রাধান্য দেওয়াকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি।”
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা যমুনার পাশে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—আবাসন সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য বৃত্তি কার্যকর করা, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পূর্ণাঙ্গভাবে অনুমোদন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করা।