
বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা চালাতে গিয়ে এখন পর্যন্ত বুয়েটের ৫৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রায় ঘোষণার পর বুয়েটে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
রায়ে ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত।
বুয়েট উপাচার্য বলেন, আবরারের পরিবারের পক্ষ থেকে যেটুকু চাওয়া হয়েছে, তা আমরা দিয়েছি। মাসিক সাহায্য করেছি। প্রতি মাসে ৭৫ হাজার টাকা দিচ্ছি। ওনারা আর্থিকভাবে সংকটে পড়েছেন। এজন্য আমি উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার পর জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে প্রতি মাসে ৭৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আইনি সহায়তা ও আইনজ্ঞের যে ফি এবং স্টুডেন্টদের আনা-নেওয়া করা সাক্ষী হিসেবে খরচ, আনুষঙ্গিক সব খরচ, এমনকি ঢাকায় এসে থাকার খরচ সবকিছু আমরা বুয়েট থেকে বহন করেছি। প্রায় ৫৫ লাখ টাকা এ পর্যন্ত গেছে। এর বাইরে প্রতি মাসে যেটা দেওয়া হচ্ছে, সেটা ১২ বছর দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে উনি যদি আমাদের কাছে চান এই সাপোর্ট আমরা অবশ্যই দেবো।
তিনি বলেন, আবরারের বাবা-মায়ের প্রতি আমরা সহমর্মিতা দেখিয়েছি। তাদের বুয়েটের পক্ষ থেকে যতদূর সম্ভব সাহায্য সহযোগিতা করেছি, ভবিষ্যতেও করব। আমরা তাদের আইনি ও আর্থিক সহযোগিতা করেছি।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তির রায় ঘোষণা হয়েছে। আমরা মনে করি, এটা দ্রুত কার্যকর হওয়া উচিত।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। ওই দিনগত রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, আবরার হত্যার আসামিদের সাময়িক বহিষ্কার এবং হলগুলোতে নির্যাতন বন্ধে নানা পদক্ষেপ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।