অর্থ লেনদেনের বিষয়টি শোভন-রাব্বানীর বানোয়াট গল্প: জাবি উপাচার্য

প্রতিনিধি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:৫৫

জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইয়াসমিন। ফাইল ছবি
উন্নয়ন প্রকল্প থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে
এক কোটি ৬০ লাখ টাকা অর্থ লেনদেনের বিষয়টি শোভন-রাব্বানীর বানোয়াট গল্প বলে দাবি করেছেন
জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইয়াসমিন। এ বিষয়ে তিনি শোভন-রাব্বানীকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
আর ঘটনা তদন্ত করে দেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও আচার্যকে অনুরোধ করবেন
বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্য তার বাসভবনে সাংবাদিকদের
এ সব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, ‘টাকা-পয়সা নিয়ে তাদের সঙ্গে
আমার কোনো কথা হয়নি। অর্থ লেনদেনের বিষয়টি বানোয়াট। তারা কার কাছে কমিশন পায় বা পায়
না, তা আমি জানি না। এ বিষয়ে তারা আমাকে ইঙ্গিত দিলে আমি বলি, তোমরা টাকা-পয়সা নিয়ে
কোনো আলাপ আমার সঙ্গে করবে না।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম ও তার
পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপের ৪৫০ কোটি
টাকার মধ্যে ২ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মধ্যে
ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়—এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্যের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের এই অভিযোগ তদন্তসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু
হয় ক্যাম্পাসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে
দেখা করেন উপাচার্য।
উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের মূল উদ্দেশ্য ছিল
তারা ঠিকাদারদের কাছ থেকে কিছু কমিশন নেবে। কিন্তু তারা আমার কাছে এসে হতাশ হয়েছে।
তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে চিঠি লিখেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
প্রধানমন্ত্রী বরাবর ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী
ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী যে খোলা চিঠি দিয়েছেন, সে বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘তারা
মিথ্যা গল্প ফেঁদেছে। আমি তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম। এ বিষয়ে আমি তদন্ত করতে
বলব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে ও মাননীয় আচার্যকে।
উপাচার্য বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ থেকে বাঁচতে ও নিজেদের
অন্যায় ঢাকতে ছাত্রলীগ মিথ্যা গল্প সাজিয়েছে।’ তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাচ্ছি।
গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে ও গণমাধ্যমে দেয়া
বক্তব্যে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী অভিযোগ করেন, জাবি ভিসি উন্নয়ন
প্রকল্প থেকে শাখা ছাত্রলীগকে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন এবং তার স্বামী ও ছেলে ছাত্রলীগকে
ব্যবহার করে ‘কমিশন-বাণিজ্যে’ জড়িয়েছেন।
গোলাম রাব্বানীর সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ভিসি
ফারজানা ইসলাম দাবি করেছেন, বিভিন্ন সময় শোভন-রাব্বানী জাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে নানা
দাবি-আবদার করেছেন। তাদের সেসব অনৈতিক দাবি পূরণ করিনি আমরা। তাই হতাশ হয়েই এসব মিথ্যা
গল্প প্রচার করছেন তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ৪৪৫
কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত উন্নয়নকাজের জন্য
এ বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৫টি আবাসিক হল (তিনটি ছাত্র ও দুটি ছাত্রীনিবাস) নির্মাণের
জন্য ৩৬৭ কোটি টাকার টেন্ডার চূড়ান্ত হয়েছে। সেই উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ছাত্রলীগ কমিশন
নেয় বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।