সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের রক্ত দিতে এসেছেন চবি শিক্ষার্থীরা

চবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২২, ০৯:৪২

চবির দুটি বাসে শিক্ষার্থীরা চমেকে রক্ত দিতে যান। ছবি : চবি প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহতদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিবেশ। চিৎকার, কান্না আর আহাজারিতে ভারী পুরো হাসপাতাল। শুধু হাসপাতাল নয়, হাসপাতালের সামনেও শত শত মানুষ তাদের স্বজনদের খোঁজে জড়ো হয়েছেন। তাদের নিঃশ্বাসে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো পরিবেশ।
আগুন ও বিস্ফোরণে জখম মানুষের জন্য জরুরিভাবে রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সেজন্য এগিয়েও এসেছেন স্থানীয় রক্তদাতা ও বিভিন্ন রক্তদাতা সংগঠনের সদস্যরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রক্তদানের আহ্বান জানাচ্ছেন অনেকে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে, পজিটিভ গ্রুপের রক্ত নিয়ে তেমন সংকট এখন পর্যন্ত হয়নি। অনেক রক্তদাতা পাওয়া গেছে যারা মেডিকেলে গিয়ে ও ব্লাড ব্যাংকে রক্ত দিয়েছেন। তবে নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের সংকট রয়েছে।
এদিকে আহতদের চিকিৎসায় রক্তের সংকট দেখা দেওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কয়েকশত শিক্ষার্থী রক্ত দিতে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন। আজ রবিবার (৫ জুন) ভোরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি বাসে করে শিক্ষার্থীরা চট্টগাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে যান।
এর আগে আহত রোগীদের রক্তের প্রয়োজন বলে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল। এ খবর পেয়ে রক্তদানে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে যান।
রক্তদাতা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লিসান আহমেদ বলেন, এতগুলো মানুষ ভীড় করেছে শুধু রক্ত দিতে। শুধু আমার মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না, সব শ্রেণির লোক। রাস্তায় হাজারো মানুষের ঢল। অনেকে কান্নাকাটি করছে ‘ভাই বাসে তোলেন রক্ত দেব’।
কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে তিনজন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গতকাল শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে রাত ১১টার দিকে কনটেইনার বিস্ফোরণে সমগ্র এলাকা কেঁপে ওঠে। এরপর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
এদিকে চমেকের আইসিইউ রোগীতে পরিপূর্ণ হহ্যে যাওয়ায় রোগীদের চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচে) আইসিইউতে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।
এছাড়া চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোতে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।