কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও হল ছাড়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী মাহফুজ উল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এদিকে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। হাফিজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। এছাড়া অভিযুক্ত হাফিজের বিচার ও তার বহিষ্কার দাবি করে বিকেল ৪টায় প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে, ভুক্তভোগী মাহফুজ উল হক শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ৪২০ নং কক্ষে থাকেন। আজ সোমবার (১৫ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষবর্ষের সোহানুর রহমান নামের এক ছাত্রলীগকর্মী তার কক্ষে এসে ছাত্রলীগের মিছিলে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করে। এরপর হাফিজ মাহফুজের কক্ষের সামনে এসে রবিবার রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মিছিলে গিয়েছিল কি-না জিজ্ঞেস করেন। পরে তিনি মিছিলে গিয়েছে জানালে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মিছিলে যাওয়ার কারণ জানতে চায় হাফিজ। তখন চটে গিয়ে হাফিজ তাকে বলেন, ‘তুই কি রাজাকার? রাজাকার না হলে ওই মিছিলে গেলি কেন?’ তখন ভুক্তভোগী মাহফুজ বলেন, ‘আমি রাজাকার হবো কীসের জন্যে? কোনটা ব্যঙ্গার্থক আর কোনটা আসলেই সেটা তো আপনার বোঝা উচিত।’
এরপর উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কক্ষে থাকা ঝাড়ু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন অভিযুক্ত হাফিজ। তিনি আবারো মারতে উদ্যত হলে সেখানে উপস্থিত থাকা সোহান এবং সৌরভ শেখ হাফিজকে আটকালে চলে যাওয়ার সময় তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম থেকে ফিরে যেন তোকে হলে না দেখি। যদি কেউ কিছু বলে, বলবি আমার নাম হাফিজ। তোর কে আছে দেখবোনে।’
অভিযুক্ত মেহেদী হাসান হাফিজ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ঘুম থেকে উঠে ছাত্রলীগে মিছিলে চলে গেছি। এ ধরনের মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ তবে সেখানে উপস্থিত থাকা সোহান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘ভুক্তভোগী ছেলেটা রবিবার রাতে ‘রাজাকার রাজাকার’ শ্লোগান দিয়েছিল। এ কারণে হয়তো কথাকাটাকাটি হয়েছে। তবে মারধরের বিষয়টা ভিত্তিহীন। মারধরের বিষয়ে আমরা সমর্থন করি না। যদি এমন হয়ে থাকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের বিষয় তারা দেখবে। নেতারা বিচার না করলে আমি ব্যবস্থা নেব।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে মিটিং করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh