কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের গণহত্যা, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার, হয়রানি, অত্যাচার, নিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
গতকাল সোমবার (২৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত এক বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সরকার সৃষ্ট সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশে এক অস্থিতিশীল পরিবেশের প্রেক্ষিতে সারা দেশের ছাত্রসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন রাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।
বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল আলিম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আমীরুল ইসলাম বলেন, গত রবিবার সর্ব উচ্চ আদালত সরকারী চাকরি ৯৩ শতাংশ মেধা, ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে নিয়োগের আদেশ দিয়ে একটা রায় দিয়েছেন। কিন্তু রায়ের পর ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা মামলা দিয়ে নির্যাতন শুরু করেছে, অন্যতম কয়েকজন সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে গিয়ে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাস ও পুলিশ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার এবং নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করেছে।
বিবৃতিতে তারা আরো জানান, অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করা, আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সর্বপরি বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার বন্ধ করার জন্য সংগঠনের নেতারা আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সারাদেশে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাস ও পুলিশ এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছাত্রসহ পাঁচ শতাধিক মানুষের নির্মম মৃত্যু ও সহস্রাধিক মানুষ আহত হয়েছে। সরকারের প্রশ্রয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করেছে। আমরা মনে করি এই সন্ত্রাসীরা সরকারি ছত্রছায়াই আছে। সেই সঙ্গে এতগুলো প্রাণহানির সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিহত পরিবারের গুলির যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার দাবিসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতা কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান তারা।
প্রসঙ্গত, সরকারি সকল গ্রেডের চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবি সারা দেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কারফিউ জারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সাথে দেশব্যাপী সহিংসতায় শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ হতাহত হয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh