Logo
×

Follow Us

ক্যাম্পাস

বেরোবির সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখ্যান করলেন উপদেষ্টা নাহিদ

Icon

বেরোবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:০৪

বেরোবির সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখ্যান করলেন উপদেষ্টা নাহিদ

উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ১৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। সেখানে তাকে দেওয়া সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।

আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় আলোচনা সভায় তিনি এই সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

উপদেষ্টা নাহিদের বক্তব্যের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দুই আলোচককে সম্মাননা স্মারক দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের আমাদের সামনে সম্মাননা দেওয়া আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। মঞ্চে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর কমলেশ চন্দ্র রায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি। যেখানে আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি মশিউর রহমান সেই বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শফিকুর রহমান গত ১৩ই আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকের কলামে লিখেছিলেন ‘আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পরেও পরিস্থিতি সামলানোর পার্যায়ে ছিল।’ এই লাইনটি দ্বারা তিনি কি বুঝিয়েছেন আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে চাই।

এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনে সরাসরি তার সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, যে মঞ্চ থেকে আওয়ামীলীগের দোসররা সম্মাননা স্মারক নিয়েছিলেন সেই একই মঞ্চ থেকে আমি সম্মাননা স্মারক নিচ্ছি না। হয়ত কোনো একদিন ফ্যাসিবাদমুক্ত বেরোবিতে আসব এবং প্রকৃত সম্মাননা নেব। এছাড়া তিনি বেরোবি উপাচার্যকে এ সব বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বলেন।

এইদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনে প্রফেসর ড. শফিকুর রহমান বলেন, আমার সেই কলামটির শিরোনাম ছিল ‘আবু সাঈদ যখন রাজনীতিবিদদের শিক্ষক। আমি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিলাম। ফেসবুকে লেখালেখি করেছিলাম। তারপরও যেহেতু আজ আমার কলামের একটা লাইন নিয়ে আমার দিকে আঙুল তোলা হয়েছে, তাই আমাকে যে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়েছে সেটি আমি শিক্ষার্থীদের মতকে সম্মান জানিয়ে সারেন্ডার করলাম।

অনুষ্ঠানের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, আমি এসেছি এখনো একমাসও হয়নি। আমাকে তো মানুষগুলো চিনতে হবে। আমি সবকিছু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে পদক্ষেপ নিই। আর আমি তো মানুষগুলোকে বলতে পারি না আপনারা পদ থেকে সরে যান। আমাকে সময় দেন ইনশাআল্লাহ সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ‘ধন্য বেরোবি, গড়ব দেশ, আবু সাঈদের বাংলাদেশ’ স্লোগানকে ধারণ করে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. নাহিদ ইসলাম এবং ইউজিসির পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসে বর্ণিল আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। বাদ্যের তালে তালে শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে পার্কের মোড় প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বর্ণিল শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রা শেষে দিবসটি স্মরণীয় করে রাখতে অতিথিরা বৃক্ষরোপণ করেন।

এছাড়া বিকেলে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাদ আসর কেন্দ্রীয় মসজিদে দুআ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোকসজ্জাসহ ক্যাম্পাসকে নানাভাবে সাজানো হয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫