গবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৪ এএম
আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৬ এএম
সম্প্রতি ফেসবুকের পাবলিক গ্রুপ, পেইজে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানহানিকর পোস্ট করায় এ বিষয়ে সতর্কতামূলক নোটিস জারি করেছে গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) প্রশাসন। এ নোটিস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বইছে শিক্ষার্থীদের সমালোচনার ঝড়।
গতকাল মঙ্গলবার
(৩১ ডিসেম্বর) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু মুহাম্মদ মুকাম্মেল স্বাক্ষরিত নোটিসে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
নোটিসে
বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পর্কে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেইজ, আইডিতে মানহানিকর পোস্টের কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং বিভিন্ন মহলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই ধরনের স্ট্যাটাস
বা মন্তব্যের সঙ্গে কারো সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।’
বিকেলে
নোটিসটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ কমেন্ট করে প্রশ্ন তুলছেন, ‘গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী,
কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পর্কে ফেসবুকে যদি সত্য লিখার কারণে ওই ব্যক্তি/গোষ্ঠীর
মানহানি হয়; তবে সেখানে দোষটা কার? যে লিখেছে তার?
নাকি যার সম্পর্কে সত্য তুলে ধরেছে তার? এটি সাইবার সিকিউরিটি আইন? নাকি নিজেদের বাঁচানোর জন্য প্রাণ বাঁচাও বন্দোবস্ত আইন?’
জানা
যায়, গত কয়েকদিন ধরেই
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে, পেইজে ফেইক আইডির মাধ্যমে বিভিন্ন সময়েই আইন বিভাগের কিছু শিক্ষককে কেন্দ্র করে মানহানিকর পোস্ট করায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নিকট দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে এই নোটিস জারি বিশ্ববিদ্যালয়
কর্তৃপক্ষ।
এ
বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক সমালোচনা করতেই পারে। বরং এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়ন হয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অধিকার সংবিধান কাউকে দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় এমন কাজ কেন করবে? এটা একটা স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত।’
মেডিকেল
ফিজিক্স অ্যান্ড বায়োমেডিকেল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল হাসান শোভন বলেন, ‘ইদানিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্ৰুপে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নামে
আপত্তিকর পোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নাই।’
তিনি
আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা থাকবে, গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এটার সমাধান থাকবে- এটাই স্বাভাবিক । সমস্যা থাকবে,
সমালোচনা থাকবে না বিষয়টা নিতান্তই
দুঃখজনক। নতুবা সমস্যার সমাধান বের করা কঠিন হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীবান্ধব হতে হবে। যদি কোনো শিক্ষার্থীর সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ বক্স চালু হয়েছে। সেখানে যথোপযুক্ত অভিযোগ প্রদান অথবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো যেতে পারে। সমস্যার সমাধান না হলেও বিষয়টি
গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।’
এ
ব্যাপারে উপাচার্য ড. মো. আবুল
হোসেন বলেন, ‘গঠনমূলক সমালোচনা শিক্ষার্থীরা করতেই পারে; কিন্তু অপপ্রচার বা মানহানিকর সমালোচনা
করা সমীচীন নয়। শিক্ষার্থীদের গঠনমূলক সমালোচনা করতে কোনো বাধা নেই, কিন্তু কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা ঠিক নয়।’
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh