Logo
×

Follow Us

পুঁজিবাজার

পুঁজিবাজার ঠিক করতে ‘বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনছে’ সরকার

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১৮:০৪

পুঁজিবাজার ঠিক করতে ‘বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনছে’ সরকার

পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের মধ্যে রবিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে বাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে পাঁচটি সিদ্ধান্ত হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের মধ্যে বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

টানা দরপতনের প্রতিক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি চেয়ারম্যানে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবির মধ্যে রবিবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সরকার প্রধান। এরপর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বিবৃতি পাঠানো হয়। এতে সরকারের পাঁচটি সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

এসব নির্দেশনার প্রথমেই বলা আছে, “স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজি রুখতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার করা।”

২০১০ সালের মহাধসের পর বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কখনও সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চার কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৮০০ পয়েন্ট বেড়ে যাওয়ার পর আশাবাদী হয়ে উঠেন বিনিয়োগকারীরা।

কিন্তু পরের দিন থেকেই শুরু হয় দরপতন, যা চলছে গত ৯ মাস ধরে। উত্থানের এই সময়ে যারা নতুন করে বিনিয়োগ করেছেন, তারা অর্থ খুইয়ে হতাশ হয়েছেন, বিনিয়োগকারীরা নিয়মিত বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।

পুঁজিবাজারে দরপতনের পর একেক সময় একেক ‘কারণ’ সামনে আসে। নতুন বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রসঙ্গ। যদিও হামলা পাল্টা হামলার মধ্যে পাকিস্তানের পুঁজিবাজারই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির আগের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামকে অপসারণ করে দায়িত্ব দেওয়া হয় খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে। তিনি পুঁজিবাজারে সংস্কার করে বাজারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য যেসব পদক্ষেপের কথা বলেছিলেন, তার কোনোটাই কার্যকর হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে এই বৈঠকের আগের দিন বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন-বিসিএমআইএ সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে রাশেদ মাকসুদ যোগ দেওয়ার পর শেয়ারবাজারের ৯০ শতাংশ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এই সময়ে বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা এবং সূচক হারিয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ পয়েন্ট।”

‘অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা’

অন্য একটি সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজারে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়।

সরকার প্রধানের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “লুটপাটের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে বেসামাল করে দেওয়ার পেছনে গত কয়েক দশক ধরে যারা জড়িত, তাদেরকে বিচারের আওতায় না আনতে পারলে মানুষের আস্থা ফিরবে না।”

“শেয়ারবাজারকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা অকল্পনীয়। আমাদেরকে অবশ্যই এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হবে,” বলেন তিনি।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা আবার তুলে ধরেন।

সরকার প্রধানের দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে লেখা হয়, “শেয়ারবাজারের প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে এমন অবস্থায় ফেরাতে হবে যেন মানুষ আস্থা ফিরে পায়, এটা যেন লুটেরাদের আড্ডাখানায় পরিণত না হয়,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

বাকি তিন সিদ্ধান্ত

সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের মালিকানা রয়েছে এমন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে সরকারের শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বেসরকারি খাতের দেশীয় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এবং

বড় ধরনের ঋণ প্রয়োজন এমন ব‍্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব‍্যাংক ঋণনির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজার থেকে বন্ড ও ইক্যুইটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহে আগ্রহী করে তোলার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে।







Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫