নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ পিএম
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
গত দেড় দশকে আর্থিকখাতের দুই প্রভাবশালী সালমান এফ রহমান ও এস আলমের পুঁজিবাজারের অনিয়ম খুঁজতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
একইসঙ্গে সালমান এফ রহমানসহ তার পরিবার অন্যান্য সদস্য ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।
সোমবার বিএসইসির পরিচালক মো. মাহমুদুল হকের সই করা এক আদেশ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সালমান এফ রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। দেশের পুঁজিবাজার তার নিয়ন্ত্রণে চলতো এবং বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে বসবাস করলেও বাংলাদেশে তার রয়েছে বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা ও নানা ব্যবসা।
বিএসইসির তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—বিএসইসির পরিচালক (এফডি বিভাগ) মোহাম্মাদ আবুল হাসান, অতিরিক্ত পরিচালক (এসআরআইসি বিভাগ) মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (এসএমএমআইডি) অমিত কুমার সাহা ও সহকারী পরিচালক (এলএসডি) তৌহিদুল ইসলাম সাদ্দাম।
আদেশে বলা হয়েছে, একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ১৪ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে এস আলম গ্রুপ এবং সালমান এফ রহমানের অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সালমান এফ রহমান আশির দশক থেকেই শীর্ষস্থানীয় ঋণখেলাপি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে তার নাম এসেছিল।
'তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ সুবিধা নিয়ে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটায়। ২০১১ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানের ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো।'
এস আলমের বিষয়ে বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, একসময়ের দেশের শীর্ষ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিকে ২০১৭ সালে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সদ্য বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ। এর পর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশ। ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা। সংবাদে অভিযোগ করা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে।
ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সালমান এফ রহমান, তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকাণ্ডের ফলে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, এ নিয়ে বিশদ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh