বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি: পল্টনে ফুটবল খেলছে আন্দোলনকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৭

কোটা বাতিলের দাবিতে ‘বাংলা ব্লকেড’ পালনের এক পর্যায়ে রাজধানীর পল্টনে ফুটবল খেলায় মেতে উঠেন কিছু আন্দোলনরত শিক্ষার্থী। ছবি: বখতিয়ার আবিদ চৌধুরী
কোটা আন্দোলন বাতিলের দাবিতে সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন'-এর ব্যানারে মিছিল শুরু হয়।
এর পর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মিছিলটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে শাহবাগ, গুলিস্তান এবং পল্টন মোড়ে অবস্থান নেয়। এ মুহূর্তে গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে পল্টন মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফাঁকা রাস্তায় ফুটবল খেলতে দেখা যায়, এছাড়া অনেককে আবার দলবন্ধ হয়ে অনলাইন গেম খেলতে দেখা যায়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ আদালতের রায়ে যদি কোটা বহাল রাখা হয় তাহলে আমাদের আন্দোলন চলবে। আর যদি কোটা রাখতেই হয় তাহলে ৫ শতাংশের বেশি নয়। আমরা মনে করি, কোটা ব্যবস্থা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। একজন শিক্ষার্থী বেশি নাম্বার পেয়েও নিয়োগ পাবে না, আর আরেকজন কম নাম্বার পেয়েও কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়ে যাবে এটি হতে পারে না। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে মেধার ভিত্তিতে হোক, যাতে যোগ্যতম প্রার্থীরাই চাকরি পায়। হাইকোর্টের যে রায় হয়েছে সেটি আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু থাকতেও কোটা পদ্ধতি স্থায়ীভাবে বহাল হতে দেওয়া হবে না।
কোটা ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে রায় না এলে আন্দোলন চলমান থাকবে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, অন্যায় এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আজ সড়কে অবস্থান করবেন। আমরা কোটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কোটার মাধ্যমে বৈষম্য করা হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সর্বাত্মক ‘বাংলা ব্লকেড’ অনুযায়ী আগামীকাল (বুধবার) সারাদিন দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধ করা হবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের পাশাপাশি হাইওয়ে এবং রেলপথও এই ব্লকেডের আওতায় থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। এই আন্দোলনের ফলে জনসাধারণের যে ভোগান্তি হচ্ছে তার প্রতি আমরা সংবেদনশীল। কিন্তু এর দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে। কারণ এতদিনের আন্দোলনের পরেও তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেনি। আমরা চূড়ান্ত সমাধান চাই। আমরা চাই, অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম ৫ শতাংশে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে। যেন পরবর্তীতে এটি আবার সমস্যা হিসেবে সামনে না আসে।