
ফাইল ছবি
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পূর্বাচলে রাজনৈতিক বিবেচনায় বরাদ্দ দেওয়া প্লটগুলো বাতিল হতে যাচ্ছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় বরাদ্দকৃত প্লট যা এখনও রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) হয়নি, এমন শতাধিক প্লট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
রাজউকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এসব বরাদ্দ দেওয়া প্লটের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। তবে কী পরিমাণ প্লট বাতিল হবে, তা এখনও জানা যায়নি। মূলত যেগুলোর রেজিস্ট্রেশন হয়নি, এমন শতাধিক প্লটের তালিকা তৈরি করেছে সংস্থাটি। যা আগামী বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত হতে পারে।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, রাজউকের সংরক্ষিত প্লটগুলোর মধ্যে ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের বিভিন্ন সময় ২৮৫ জনকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরপরও প্লট বরাদ্দ পান আরও অনেকে। যেগুলোর সিংহভাগই ছিল বিগত সরকারের রাজনৈতিক বিবেচনায়। এর মধ্যে ১৪৯টিই পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, উচ্চ পর্যায়ের আমলা, ছাত্রলীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেতারা। সেসময় ঢাকায় প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক জনপ্রতিনিধিদেরও প্লট বরাদ্দ দিয়েছিল রাজউক। এ বিষয়ে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের ভাষ্য ছিল, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এভাবে প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন তারা।
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ‘এক টাকা’ পারিশ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা আরিফিন শুভ। পরে সরকারি সিদ্ধান্তে তাকে রাজউকের পূর্বাচল নিউটাউন প্রকল্পে একটি ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দের ঘোষণা দেওয়া হয়। একইভাবে ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক লিটন হায়দারকেও বরাদ্দ দেওয়া হয় রাজউকের ৩ কাঠার একটি প্লট।
রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প থেকে সংরক্ষিত কোটায় অভিনেতা আরিফিন শুভকে বরাদ্দ দেওয়া ১০ কাঠা আয়তনের প্লটটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পাশাপাশি প্রযোজক লিটন হায়দারের প্লটও বাতিল হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন জনকে যেসব প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল সেগুলো নতুন করে বিশ্লেষণ, সমাধান এবং প্লট বরাদ্দ বাতিলের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সময়ে সংরক্ষিত কোটায়, রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন জনকে রাজউকের এসব প্লট বরাদ্দ দিয়ে এসেছে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রাজউকের পক্ষ থেকে তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। মূলত যেসব প্লটের এখনও রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) হয়নি এমন শতাধিক প্লটের তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। যা আগামী বোর্ড সভায় উপস্থাপন করে বরাদ্দ বাতিল করা হতে পারে। তবে কী পরিমাণ প্লট বাতিল হবে, তা এখনও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে মূলত বোর্ড সভা থেকেই।