-674054d738b3d.jpg)
শিশু সুমাইয়া। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকালর
ঠিক যে সময়ে মায়ের আদর-ভালোবাসায় থাকার কথা তখন রৌদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে রিক্সায় দিন-রাত পার করছে দুই বছরের শিশু সুমাইয়া। এটি কোনো গল্প বা উপন্যাসের কাহিনি নয়। এমনই এক জীবন নিয়েই বেড়ে ওঠছে এই শিশুটি।
প্রায় আট মাস আগে মা লতিফা সুমাইয়ার
বাবাকে ডিভোর্স না দিয়েই অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। এমনটাই জানালেন সুমাইয়ার
রিক্সা শ্রমিক বাবা মফিজুল ইসলাম।
সুমাইয়া ও রিক্সা শ্রমিক মফিজুলের দেখা মেলে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে। সে সময়ে বাবা পরম আদরে রাস্তার পাশে রিক্সার ভেতর সুমাইয়াকে খাওয়াচ্ছিলেন।
কৌতুহল নিয়ে জানতেই চাই শিশুটিকে কেন রিক্সায় খাওয়াচ্ছে।
তখনই সুমাইয়ার মানবিক গল্পটি জানতে পারি।
মফিজুল জানান, ইটভাটায় কাজ করার সময় তার স্ত্রী লতিফা সুমাইয়াকে
রেখে অন্য পুরুষের সঙ্গে চলে যান। বাবা হিসেবে তো সন্তাকে ফেলে দিতে পারেন না। আক্ষেপ
করে বলেন, ‘সন্তানকে তো মেরেও ফেরতে পারবো না। তাই রিক্সায় আমার সঙ্গেই বাচ্চাটাকে
রাখি। এখানে কোনো ঘর নেই আমার। রাত হলে ফুটপাতে নিজের বাচ্চাকে নিয়ে রিক্সায় থাকি।’
মফিজুলের স্ত্রী লতিফা চলে যাবার সময়ে আরও একটি সন্তান গর্ভে ছিল। কিছুদিন হলো সে সন্তান লামিয়াও এখন বাবা মফিজুলের কাছে। লামিয়ার জন্মের পর বাবা মফিজুল তাকে নিয়ে আসেন। এ সন্তানকে গ্রামে মফিজুল তার বোনের কাছেই রাখছেন। কিন্তু সুমাইয়াকে দরিদ্র বোনের রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে এ রাজধানীর বুকে নিয়ে আসেন। শুধু সুমাইয়া কিংবা লামিয়াই নয়, মফিজুল ও লতিফোর আছে আরও এক ছেলে। ১০ বছরের নিবিড় গামে একটি মাদ্রায় পড়ালেখা করে জানান তার বাবা।
মফিজুল নীলফামারীর ডোমরা থানার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের
ছেলে। বর্তমানে চোখে অন্ধকারই দেখছেন বাবা মফিজুল। তিন সন্তানকে কিভাবে মানুষ করবেন
সে চিন্তা মাথায় রেখেই রিক্সা নিয়ে তাকে শহরের এ দিক থেকে ঐ দিকে ছুটতে হচ্ছে।