সৃজনশীল কাজে যুক্ত শিশুরা ঝড়-ঝাপটার মধ্যে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারে এবং ভবিষ্যত দিক-নির্দেশনায় রেখাপাত করবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশকাল নিউজ ডটকমের সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ। এ ধরনের সৃজনশীল কাজের পাশে সবসময় দেশকাল নিউজ থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শনিবার রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে সিদীপ ভবনে ‘আর্ট পোয়েট্রি’ ও ‘শিক্ষালোক’ এর যৌথ উদ্যোগে শিশুদের নিয়ে ‘চিল্ড্রেন আর্ট কম্পিটিশন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আয়োজনটির মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দেশকাল নিউজ ডটকম ও সাম্প্রতিক দেশকাল।

ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ বলেন, “শিশুরা স্বর্গের ফুল, তারা পৃথিবীতে আসা স্বর্গের ফুল হিসেবে। তারা পৃথিবীতে আসে স্বর্গের সুবাস নিয়ে। সৃজনশীল কাজে যুক্ত শিশুরা ঝড়-ঝাপটার মধ্যে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারে।”

শিশুদের যত্ন করলে ভবিষ্যত দিক-নির্দেশনায় রেখাপাত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

দেশকাল নিউজ ডটকমের সম্পাদক বলেন, “আমাদের সুকুমার বৃত্তিগুলো হারাতে বসেছে। মোবাইল ও অন্যান্য বিষয়ের কারণে সৃজনশীল কর্মকাণ্ড আগের মতো হচ্ছে না। ছোট শিশুরা ছবি আঁকে কল্পনা থেকে, সেই কল্পনাতে তার প্রকাশ। এখানে একটি শিশু মায়ের কাছে কীভাবে থাকতে চাই ছবিতে তার কল্পনার প্রকাশ করেছে দারুণভাবে।”

তিনি আরও বলেন, “যশোরে এস এম সুলতান নিজের বাড়ির কাছে শিশুস্বর্গ গড়ে তুলেছিলেন। শিশুদের যে গুরুত্ব আমাদের এখানে যারা নমস্য তারা চিন্তা করে থাকেন। সিদীপের অনেক ধরনের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড আছে, সৃজনশীল কাজের পেছনে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা আছে।”

ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ বলেন, “শিক্ষালোক ও আর্ট পোয়েট্রি দেশের ১১ জেলার ৩৩ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাগার ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ছড়িয়ে দিচ্ছে।”

নিজের প্রতিষ্ঠান দেশকাল নিউজ ডটকম আগামীকাল চালু হবে জানিয়ে পোর্টালটির সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ বলেন, “সৃজনশীল কাজের পাশে দেশকাল নিউজ ডটকম সবসময় থাকবে।”

চট্টগ্রাম চারুশিল্পী পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা নাটক-সিনেমায় দেখেছি, শিল্প-সাহিত্যে যারা যুক্ত তারা গরিব। ফলে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের এ অঙ্গনে আসতে দিতে চাইতেন না। কিন্তু শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত পরিবারগুলো জানত এটির ক্ষেত্র আছে। ফলে এসব পরিবারের অনেকেই এখানে এসে ভালো করছে।”

পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুদের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম চারুশিল্পী পরিষদের সহ-সভাপতি কাজী গোলাম কিবরিয়া বলেন, “আজকে যেসব শিশুরা অংশগ্রহণ করেছে যারা পুরস্কার পায়নি তাদেরকে প্রথমে অভিনন্দন। তোমরা যেন আগামীতে পুরস্কার নিতে পারো। আর যারা পুরস্কার পেয়েছো তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই। তোমরা যেন নিজেদের কাজ অব্যাহত রাখো।”

সিদীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, “আমি বোমার জেনারেশনের। আজ যারা ছবি আঁকছে তারা কেউ জুমার্স জেনারেশন, কেউ আলফা জেনারেশনের। আমি আশাবাদী আগামীতে যারা সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত থাকবে তাদের সমাজ আরও ভালোভাবে মূল্যায়ন করবে।”

শিল্পী শিশির মল্লিক বলেন, “আমরা শিল্পীকে নন্দনবোধ থেকে দেখি। আর্ট পোয়েন্টির এটি দ্বিতীয় অনুষ্ঠান শ্রমিক দিবসকে ঘিরে। শিশুদেরকে জাতিদের ভবিষ্যৎ মনে করি। শিশুদেরকে গড়ে তোলার সামাজিক দায়বোধ রয়েছে। শিশুরা ছোট থেকেই খাতাকলম পেলে আঁকাআঁকি শুরু করে। কিন্তু অনেক সময় সমাজ থেকে তাদের প্রতিভা বিকাশের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। শিশুদের প্রতিভা বিকাশের চেষ্টাটি আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।”

প্রতিযোগিতায় এ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন রুমাইসা বশির নেত্র, প্রথম রানারআপ ফাতিহা সিকদার ও প্রশংসা বুদ্ধ দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে।

বি গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ফাহমিদা ফাইজা দিপ্তী, প্রথম রানারআপ আলিজা আমির, সিদরাতুল মুনতাহা দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে।

সি গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন রুকায়াত বিনতে মাহবুব, রানারআপ শারমিন আকতার ও আলিফা খান আরশী দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে।

আর্ট পোয়েট্রির নির্বাহী পরিচালক শিশির মল্লিকের সভাপতিত্বে ও শিক্ষালোকের নির্বাহী সম্পাদক আলমগীর খানের সঞ্চালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।