
স্ত্রী ও নিজ কন্যা সন্তানকে খুনের মামলায় কনডেম সেলে টানা বিশটি বছর কাটানোর পর বাগেরহাটের শেখ জাহিদ আজ মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) জানতে পারলেন তিনি নির্দোশ।
আজ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এক রায়ে জানিয়ে দেন- স্ত্রী ও কন্যা হত্যার অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারার কারণে খালাস দেয়া হলো শেখ জাহিদকে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে- ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি বাগেরহাটের ফকিরহাট থানার রহিমা ও তার দেড় বছরে কন্যা সন্তান ঘুমন্ত অবস্থায় খুন হন। পারিবারিক কলহের অভিযোগে ঐদিনই মামলা হয়। এ মামলায় ২০০০ সালের জুন মাসে স্বামী শেখ জাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেন বাগেরহাট দায়রা জজ আদালত। সেই থেকে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে ঠাঁই হয় শেখ জাহিদের। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য আসে হাইকোর্টে। ২০০৪ সালের জুলাইতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টে এক রায়ে জানিয়ে দেন, শেখ জাহিদই তার স্ত্রী ও সন্তানকে খুন করেছে। পরবর্তীতে মামলাটি আপিল বিভাগে যায় ২০০৭ সালে।
গত সপ্তাহে মামলাটি নজরে পরে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় সর্বোচ্চ আদালত। নিযুক্ত করা হয় শেখ জাহিদের আইনজীবী। কিন্তু মামলার শুনানি করতে গিয়ে আপিল বিভাগ দেখেন নানা অসঙ্গতি।
মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হন ৮ জন। এমনকি হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টিও প্রমাণ করতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। আর তাই জাহিদকে খালাস দেন সর্বোচ্চ আদালত।
এমন খালাস পাওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীও। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলছেন, একজনের জীবন থেকে কনডেম সেলে ২০ বছর হারিয়ে যাওয়া কষ্টের। যারা জড়িত তাদের সাজা হওয়া উচিত।
আপিল বিভাগ তার রায়ে দ্রুত শেখ জাহিদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার রায়ের অনুলিপি পাঠানো হবে কারাগারে।