রাজধানীতে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

মাহমুদ সালেহীন খান
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১১:৪৮

সকালে থেকে রাজধানীর সড়কে বাস কম চলছে। ছবিটি ফার্মগেট এলাকা থেকে তোলা। ছবি : মেহনাজ খান
রাজধানীর বিভিন্ন রুটে আজ বুধবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট চলছে। গত কয়েকদিন ধরে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বাস ভাড়া ও ওয়েবিল নিয়ে কথাকাটাকাটি চলছিল। তার জের ধরে সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা অঘোষিত ধর্মঘট পালন করছে।
আজ সকালে থেকে সড়কে বাস চললেও তা ছিল খুবই কম। সকাল অফিসগামী যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তবে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তার এই ধর্মঘটের দায় স্বীকার করেননি। যাত্রী কল্যাণ পরিষদ থেকে বলা হয়েছে, সরকার পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য বন্ধ করতে না পারলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা আসবে।
আরও পড়ুন : আসুন, এভাবেই ভাড়া নৈরাজ্যের প্রতিবাদ করি
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওয়েবিল অনুযায়ী যাত্রীরা বাস ভাড়া দিতে আপত্তি জানান। এই আপত্তির কারণে গতকাল মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে মিরপুর রোডের গাড়ি বন্ধ করে দেন পরিবহণ শ্রমিকরা। হয়রানির কারণ দেখিয়ে অঘোষিত ধর্মঘটে যান তারা। এতে মিরপুর থেকে গুলিস্তান-উত্তরা-গাবতলীসহ বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

আগাম ঘোষণা ছাড়া বাস বন্ধ থাকায় নগরজুড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরিবহন শ্রমিকদের কাছে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। বাসে অর্ধেক ভাড়ায় যাতায়াতের দাবি জানিয়ে উত্তরায় সড়ক অবরোধ করেছিল শিক্ষার্থীরা।
যাত্রীদের দুর্ভোগের জন্য মালিকদেরকে দোষারোপ করছেন পরিবহন শ্রমিকেরা। তাদের দাবি, সরকার থেকে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা থাকলেও মালিকপক্ষের চাপে ওয়েবিল অনুযায়ী ভাড়া নিতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের। আর ওই ভাড়া দিতে যাত্রীরা রাজি নন।
মালঞ্চ পরিবহণের এক চালক অভিযোগ করে বলেন, ওয়েবিলের কারণে প্রতিদিনই ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছে। অন্যদিকে মালিকদের পক্ষ থেকেও ওয়েবিল অনুযায়ী ভাড়া আদায়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। বাসচালকরা জানান, এ নিয়ে বিভিন্ন রুটে আমাদের সঙ্গে যাত্রীদের হাতাহাতি মারামারির ঘটনা ঘটে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ভাড়া নিয়ে চালক শ্রমিকদের সঙ্গে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটছে। একটি অংশ বাস চালানো বন্ধ রেখেছে। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। বাস চলাচল দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে। কিছু লোক মিরপুরে গণ্ডগোল করছে। সেখানে পুলিশ আছে। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
তবে বাড়তি ভাড়া নিলে ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মো. সরওয়ার আলম।
ওয়েবিল নামে নতুন নৈারজ্য প্রসঙ্গে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এটি বন্ধে তিনবার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন্ধ করা যায়নি। সিটিং সার্ভিসের নামে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কোথাও ১০০ শতাংশ আবার কোথাও দেড়শ শতাংশ বেশি আদায় করা হচ্ছে। এখানে সরকারকে কঠোর না হলে এ নৈরাজ্য বন্ধ করা যাবে না। প্রয়োজনে সব যাত্রীদেরকে নিয়ে আমরা আন্দোলনে যাবো।
মালঞ্চ পরিবহনের জামান জানান, মালিকপক্ষ থেকে গাড়ি বন্ধ করার বিষয়ে কোনও কিছু বলা হয়নি। ভাড়া নিয়ে তর্কের জেরে আমাদের স্টাফদের একটি অংশ গাড়ি বন্ধ রেখেছে।