
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) লিয়াকত আলী লাকী
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেছেন, অভিযোগ যা এসেছে, তার অধিকাংশই অপপ্রচার। কোনো বিলে আমার সই নেই।দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমনটা বলেছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটের দিকে লিয়াকত আলী লাকী দুদক কার্যালয়ে হাজির হন। এর কিছু সময় পরেই দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে লিয়াকত আলী লাকী সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ যা এসেছে, তার অধিকাংশই অপপ্রচার। যেসব বিলের কথা বলা হয়েছে, কোনোটিতেই আমার সই নেই। আপনারা বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতা করবেন বলে আশা করি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা ২৬ কোটি টাকা উত্তোলনের কথা বলছেন, সেটা হবে ২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ১৩ কোটি টাকা বেতন-বোনাস, পৌরকর ও বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে দেড় কোটির মতো ভ্যাট-ট্যাক্সে জমা হয়েছে।
অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) লিয়াকত আলী লাকীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
চলতি বছরের শুরুতে লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে ঘুষগ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে শত কোটি টাকা আত্মসাতসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুই সদস্যের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে দুদক। তদারক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিশনের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে।
গত বুধবার (৫ জানুয়ারি) শিল্পকলার ডিজিকে দুদক এসে বক্তব্য জানাতে নোটিশ পাঠানো হয়। একই দিন শিল্পকলার বিগত দুই অর্থবছরের বাজেট, ব্যয় এবং ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের নথিপত্র চেয়ে তার কাছে নোটিশ পাঠায় দুদক।
দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক যুগ ধরে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা লিয়াকত অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি তহবিল থেকে ২৬ কোটি টাকা তুলে নেন বলে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হন। সেদিনই নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন শিল্পকলার ডিজি। ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২৬ কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে উত্তোলন করেন লিয়াকত। পরস্পর যোগসাজশে এই অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
লিয়াকতের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে সঙ্গীত বিভাগের কক্ষে ব্যবহারের জন্য পর্দা, ক্রোকারিজ ও ফার্নিচার না কিনে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ বরাদ্দ, ডান্স এগেইনস্ট করোনা কর্মসূচির আওতায় নৃত্যদলের সম্মানী, হার্ডডিস্ক ক্রয়, ডকুমেন্টেশন, প্রপস-কস্টিউম, প্রচার ও বিবিধ ব্যয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ দেন তিনি।