এক ঘণ্টার আগুনে সর্বস্বান্ত কল্যাণপুরের বস্তিবাসীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২২, ০১:০০

ফাইল ছবি
রাজধানীর কল্যাণপুরের নতুন বাজার বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। আর এতেই নিঃস্ব হয়েছেন অনেক বস্তিবাসী। আগুনে দরিদ্র এই মানুষগুলোর সব ছাই হওয়ায় নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার।
আজ রোববার (২০ মার্চ) রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ওই বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কথা হয় কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্তের সঙ্গে। কল্যাণপুরের একটি গার্মেন্টসের শ্রমিক মো. লিটন। গত ১০ বছর ধরে ওই বস্তিতে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিলে তিলে এতো বছরে গড়ে তোলা সব পুড়ে ছাই হয়েছে আজ।
লিটন বলেন, গার্মেন্টস থেকে রাত ৯টায় বস্তিতে আসি। এসে দেখি আগুনে সবকিছু জ্বলছে। আগুনের তাপ এত ছিল যে নিজের ঘরের কাছেই যেতে পারিনি। আমার সন্তানরা গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে। তাই ঘর ফাঁকা ছিল, কিছু বের করতে পারিনি। গত ১০ বছরে কষ্ট করে একটা একটা করে যেসব জিনিসপত্র কিনেছিলাম আজ আগুনে সব ছাই হয়েছে। এখন আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করতে হবে। কীভাবে সব করব মাথায় আসছে না।
বৃদ্ধ শাহজাহান মোল্লা দারুস সালামের একটি মসজিদ থেকে এশার নামাজ পড়ে এসে দেখেন তার ঘরে আগুন লেগেছে। ঘরটি তার নিজের। আগুনে তারও সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এশার নামাজ পড়ে এসে দেখি ঘরে আগুন লেগেছে। পরিবারের লোকজন কোনোমতে জীবন নিয়ে বাইরে আসতে পারলেও একটাও মালামাল নিয়ে আসা যায়নি। আমি শুরুতে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আগুনের এত তাপ যে ধারে কাছে যাওয়া যায়নি। আমার পুরো সংসার শেষ। এখন আমি রাস্তায় নেমে গেছি। এ বয়সে এসে সবকিছু আবার নতুন করে শুরু করা আমার পক্ষে সম্ভব না।
এদিকে আগুন লাগার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শাহ আলম নামে এক ব্যক্তির দোতলা বাসা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তে একটি-দুটি ঘর থেকে শুরু করে সারা বস্তিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ১০০ থেকে ১৫০টি ঘর পুড়েছে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, যে ঘরগুলোতে আগে আগুন লেগেছে সেখানে ফায়ার সার্ভিস পানি দিচ্ছিল। আমরা বারবার বলছিলাম যে ঘরগুলোতে এখন নতুন করে আগুন লেগেছে সেগুলোতে পানি দেন। কিন্তু তারা দেয়নি, আমাদেরও পাইপ দেয়নি আগুন নেভাতে। তারা যদি আমাদের হাতে পাইপ দিয়ে দিত তাহলে আমরা অনেক ঘর রক্ষা করতে পারতাম।