Logo
×

Follow Us

নগর

টিপ পরায় হেনস্তা: নারী প্রগতি সংঘ ও জনউদ্যোগের প্রতিবাদ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১৫:১১

টিপ পরায় হেনস্তা: নারী প্রগতি সংঘ ও জনউদ্যোগের প্রতিবাদ

নারী প্রগতি সংঘ এবং জনউদ্যোগের যৌথ প্রতিবাদ কর্মসূচি। ছবি- সংগৃহীত

তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দারকে হেনস্তার ঘটনা সাম্প্রদায়িক আচরণের নগ্নরূপ। সাংবিধানিকভাবেই প্রত্যেক নারী-পুরুষের নিজ আচার, পছন্দ অনুযায়ী পোশাক, সাজ নেয়ার অধিকার আছে। লতা সমাদ্দারকে হেনস্তাকারী পুলিশ সদস্যকে অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

আজ সোমবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ এবং জনউদ্যোগের যৌথ প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানান বক্তারা। 

বক্তারা বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় আমরা গণবিক্ষোভের আয়োজন করবো।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ পরিচালক সভাপতিত্বে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা লুনা নূর, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জীবনানন্দ জয়ন্ত, জাতীয় আদিবাসী ফোরামের সহ-সাংগঠনিক হরেন্দ্রনাথ সিং, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম মিন্টু, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব তারিক হোসেন মিঠুল, বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিউলি সিকদার, ইন্সটিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ডে ডেভেলপমেন্টের সমন্বয়ক সঞ্চিতা তালুকদারসহ আরও অনেকে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জীবনানন্দ জয়ন্ত বলেন, শুধুমাত্র টিপ পরার কারণে একজন নারী শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়া এবং তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা বাংলাদেশ আইনে স্পষ্ট ফৌজদারি অপরাধ। এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।

জাতীয় আদিবাসী ফোরামের সহ-সাংগঠনিক হরেন্দ্রনাথ সিং বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য ৩০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছে। এই ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন ছিল অসাম্প্রদায়িক ও উন্নত বাংলাদেশ। অথচ এখন মেয়েরা টিপ পরলে দোষ, সাইকেল চালালে দোষ। মেয়েরা যা করবে তাই দোষ। যা সংবিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান মানছি না। লতা সমাদ্দারের ঘটনাসহ প্রত্যেকটা ঘটনার বিচার চাই।

ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, টিপ পরা বাংলাদেশের সংস্কৃতি। কোনো ধর্মীয় সংস্কৃতি নয়। আমরা বাংলার হিন্দু মুসলমান সবার আগে মানুষ। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম মিন্টু বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে দেখতে পাই, একজন শিক্ষক টিপ পরার কারণে অসদাচরণের শিকার হন। ওই পুলিশ সদস্য শুধু অসদাচরণ করেই ক্ষান্ত হননি। সেই নারীকে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া হয় এবং শরীরের ওপর গাড়ি চালিয়ে হত্যা চেষ্টা করেছেন।

জনউদ্যোগের সদস্য সচিব তারিক হোসেন মিঠুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সরকার ও প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সাম্প্রদায়িকতা আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এ থেকে মুক্তি না পেলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিতভাবেই অন্ধকার। তাই অবশ্যই সাম্প্রদায়িক মনোভাবের ওই পুলিশ সদস্যকে খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে হেনস্তার শিকার হন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল। তিনি আরো অভিযোগ করেন, ঘটনার প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই বাইক চালিয়ে চলে যান সেই পুলিশ সদস্য।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫