রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু, কমলাপুরে উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৪৬

কমলাপুর রেলস্টেশনে শত শত টিকিটপ্রত্যাশী অগ্রিম টিকিট পেতে অপেক্ষা করছেন। ছবি: সংগৃহীত
ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের দুইপাশ মিলিয়ে ২৬টি কাউন্টারে একসাথে টিকিট বিক্রি করা শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ।
কমলাপুরে একটি কাউন্টারে শুধুমাত্র নারী ও প্রতিবন্ধীদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। একই সময়ে কাউন্টারগুলোর পাশাপাশি অনলাইনেও ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
কাউন্টারগুলোর সামনে থেকে টিকিটপ্রত্যাশী মানুষের দীর্ঘ সারি বাইরের দিকে চলে গেছে। কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেতে কেউ গতকাল শুক্রবার (২২ এপ্রিল) রাত থেকেই স্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড় বাড়তে থাকে।
করোনা জটিলতার দুই বছর পর প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপন করতে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে যাত্রীরা স্টেশনে টিকিট কাটতে এসেছেন। সড়ক পথের যানজট এড়িয়ে যেতে সবাই রেলপথকেই বেছে নিচ্ছেন।
আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে ২৭ এপ্রিলের আগাম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। আজ ৩৭টি ট্রেনের ২৬ হাজার ৭০০ টিকিট দেওয়া হচ্ছে। তবে বিক্রি করা ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না।
অনলাইনের পাশাপাশি রাজধানীর কমলাপুর, বিমানবন্দর, তেজগাঁও, বনানী ও গুলিস্তান পুরাতন রেলস্টেশনের ৭৭টি কাউন্টারে ঈদের টিকিট বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কমলাপুর স্টেশন থেকে দেওয়া হচ্ছে উত্তরবঙ্গগামী ও খুলনা অঞ্চলগামী ১৬টি ট্রেনের টিকিট।
কমলাপুরে অগ্রিম টিকিট কিনতে আসা এক যাত্রী বলেন, সূর্য উদয়ের একটু আগে তিনি স্টেশনে আসেন। তারপরেও তিনি টিকিটপ্রত্যাশীদের সারির অনেক পেছনে পড়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এবার ঈদে তিনি পরিবারের সদস্যদের কাছে আগেভাগেই যেতে চান। যে কারণে শত ভোগান্তি ভুলে সেহরির পর থেকে লাইনে অপেক্ষা করছেন।
সাইফুল আলম নামে এক টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, ২৭ তারিখের টিকিটের জন্য কেউ কেউ সাত থেকে আট ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি লাইনে দাঁড়ানোর পাশাপাশি অনলাইনেও টিকিট কেনার চেষ্টা করছেন। টিকিট কাটতে পারলেই যেন স্বস্তি পাবেন বরে জানান তিনি।
কমলাপুরের কাউন্টারগুলোর পশ্চিম দিকের শেষের কাউন্টারটি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে নারীদের জন্য। সেই কাউন্টারে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ টিকিটপ্রত্যাশী রেহেনা খাতুন জানান, তিনি ও তার স্বামী সেহেরি খেয়ে টিকিটের জন্য লাইনে এসে দাঁড়িয়েছেন।
স্বামীর পাশাপাশি তিনিও লাইনে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে তিনি জানান, নারীদের লাইনে মানুষের সংখ্যা সাধারণত একটু কম থাকে। তাই টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই দুজনই দাঁড়িয়েছেন যার ভাগ্যে আগে টিকিট জোটে।
রেহেনা খাতুন বলেন, রংপুর অনেক দূরের জেলা, সড়ক পথে যেতে দীর্ঘ সময় লাগে। এছাড়া ঈদের সময় সড়কে থাকে তীব্র যানজট। তাই সব কষ্ট, ভোগান্তি ভুলে ঈদের ট্রেনের টিকিটের জন্য সেহরি খেয়েই লাইনে এসে দাঁড়িয়েছি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে ছয়টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে। সেগুলো হচ্ছে- চাঁদপুর স্পেশাল দুই জোড়া, দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল এক জোড়া, শোলাকিয়া স্পেশাল দুই জোড়া, খুলনা স্পেশাল এক জোড়া। তবে এসব ট্রেনের টিকিট শুধু স্টেশন কাউন্টারে বিক্রি করা হবে, অনলাইনে বিক্রি করা হবে না।