Logo
×

Follow Us

নগর

যাত্রা শুরু সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের

Icon

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:২৩

যাত্রা শুরু সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের

সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় ৩.৮ একর জায়গায় নির্মিত হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। আজ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার ইডিসিএফ’র অর্থায়নে নির্মিতব্য এ হাসপাতালের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা আসার পর বিএসএমএমইউকে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত করার উদ্যোগ নেন।

এ লক্ষ্যে ২০১২ সালে তিনি ৩.৮ একর (প্রায় ১২ বিঘা) জমি বন্দোবস্ত করেন। জনগণের জন্য বিশেষায়িত সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ১৩৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএসএমএমইউ’র অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়।  

দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের ইডিসিএফের অর্থায়নে ১০৪৭ কোটি টাকা ঋণ সহযোগিতার মাধ্যমে হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চিকিৎসাসেবায় ভোগান্তি কমার পাশাপাশি বিদেশমুখী রোগীর সংখ্যা কমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিকল্পনা অনুসারে চিকিৎসাসেবা প্রদার করে যাওযা কর্তৃপক্ষের জন্য বেশ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে। কেননা, বরাবরই দেশে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তার ওপর বিদেশগামী রোগীদেরকেও এই হাসপাতাল সেবা দিতে চাইছে। সব মিলিয়ে প্রত্যাশা পূরণে যেনো হাসপাতাল চাপে পড়ে না যায় সে বিষয়টি গুরুত্বে সাথে কর্তৃপক্ষকে সামলাতে হবে। অন্যথায় এই প্রজেক্ট হোক আর অন্য কোনো প্রজেক্ট হোক কোনো কিছুই কাজে আসবে না।

দক্ষিণ কোরিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় নির্মিত হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যা ৭৫০। এর মধ্যে আছে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ ১০০টি আইসিইউ ও ১০০টি ইমার্জেন্সি বেড।

হাসপাতালটিতে রয়েছে ৯টি ফ্লোর ও তিনটি বেজমেন্ট। হাসপাতালে থাকছে আইটি বেইজড, মাল্টিডিসিপ্লিনারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস।

অত্যাধুনিক চিকিৎসেবা দিতে এই হাসপাতালকে পাঁচটি স্পেশালাইজড সেন্টারে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো- ইমার্জেন্সি ও ট্রমা সেন্টার, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি অ্যান্ড প্যানক্রিয়েটিক ডিজিজ, হেপাটোলজি অ্যান্ড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টার, কিডনি ডিজিজ অ্যান্ড ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টার এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এতে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে পারবে তিন হাজার রোগী।

এই হাসপাতালে আন্তর্জাতিক মানের মডিউলার অপারেশন থিয়েটার রয়েছে ১১টি। সেখানে উন্নত মানের সার্জারিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হবে। সুবিস্তৃত লবি, রিসেপশনের সাথে আরও রয়েছে সম্মেলন কক্ষ।

এই হাসপাতালের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো- এখানে কোনো রোগী চিকিৎসা নিতে এলে তাকে অন্য কোথাও যেতে হবে না। কারণ হাসপাতালের ভেতরে রয়েছে একটি কনভেনিয়েন্স শপ, ব্যাংকিং সুবিধা, ফার্মেসি, ৩৫০ সিটের উন্নত কিচেনের আওতায় তিনটি ক্যাফেটেরিয়া।

উন্নত লন্ড্রি হাউসসহ কার পার্কিংয়ের সুবিধাও রাখা হয়েছে। এতে একটি ভিআইপিসহ ১৬টি এলিভেটর, একটি এস্কেলেটর, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাপনা, হিটিং, ভ্যান্টিলেশন, এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম, সিসিটিভি ক্যামেরাও রয়েছে, যা কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

হাসপাতালটিতে আরো রাখা হচ্ছে ‘মেগা হসপিটাল ইনফরমেশন সিস্টেম’, যার আওতায় রোগীদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

বিশ্বমানের এই হাসপাতালটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই অর্থের এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। সরকার দিয়েছে ৩৩০ কোটি টাকা। আর অবশিষ্ট ১৭০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে বিএসএমএমইউ।’

তিনি বলেন, এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটিতে ভিভিআইপি ও ভিআইপি কেবিনসহ রাখা হয়েছে অন্যান্য আইসোলেটেড কেবিন। আছে সব ধরনের আইসিইউ ও সিসিইউ। হাসপাতালটি চালু হলে রোগীরা দেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসেবা পাবেন। ফলে চিকিৎসার প্রয়োজনে রোগীদের দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ লাখ মানুষ দেশের বাইরে চিকিৎসা করাতে যান। এতে ব্যয় প্রায় ৪০০ কোটি ডলার। এই হাসপাতালটির মধ্য দিয়ে ভোগান্তি যেমন কমবে, তেমনি সাশ্রয় হবে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় আরেকটি মাইলফলক অর্জিত হলো। এই হাসপাতালটির মাধ্যমে দেশে আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিত হবে। সব ধরনের জটিল চিকিৎসার ব্যবস্থা এই হাসপাতালে রয়েছে। বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫