মেট্রোরেল যাবে পুরান ঢাকায়

সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু রাজধানীর পুরান ঢাকার কোনো পরিবর্তন হয় না। সব সরকারের আমলেই উন্নয়ন ও ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়া হলেও কোনো অদৃশ্য কারণে শেষমেষ পুরান ঢাকাকে বাদ দিয়েই রাজধানীর উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে দেশের বিগত সরকারগুলো। রাজধানীর বুকে মেট্রোরেল স্থাপনের সময়ও দাবি উঠেছিল, ঢাকার শেষ প্রান্ত পুরোন ঢাকা থেকে মেট্রোরেলের স্টেশন শুরু হোক। কিন্তু তা আমলে নেয়নি বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। তবে এবার ভিন্ন চিত্র দেখা যেতে পারে পুরান ঢাকার উন্নয়নে।  

জানা গেছে, রাজধানীর জনবহুল পুরান ঢাকাকে মেট্রোরেলের সঙ্গে দ্রুত সংযুক্ত করার লক্ষ্যে মেট্রোরেলের রুট পুনর্বিন্যাস করছে পরিকল্পনা কমিশন। এক্ষেত্রে এমআরটি লাইন-৫ সাউদার্ন রুটের পবিবর্তে এমআরটি লাইন-২ রুটকে বিকল্প ভাবছে কমিশন। 

এমআরটি লাইন-৫ ঢাকার গাবতলী থেকে দশেরকান্দি পর্যন্ত। অন্যদিকে এমআরটি লাইন-২ গাবতলী থেকে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, গুলিস্তান, মতিঝিল হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত। এর সঙ্গে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত একটি শাখার মাধ্যমে এমআরটি লাইন-২ তে যুক্ত হবে পুরান ঢাকা। নতুন এই রুটটি বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠীকে সেবা দিবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। 

পরিকল্পনা উপদেষ্টার নির্দেশে নতুন এই প্রস্তাবগুলো তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, যেকোনো প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার আগে সরকার সেগুলোকে পর্যালোচনা করবে। এমআরটি লাইন-৫ এর বিষয়টি এখনো পর্যালোচনাধীন রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এছাড়া এমআরটি লাইন-২ নির্মানের পাশাপাশি আরও কয়েকটি রুট বিবেচনাধীন রয়েছে। এমআরটি লাইন-৫ প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হতে পারে বা এর কিছু অংশের কাজ বাস্তবায়ন করা হতে পারে বলে জানান তারা।

পরিকল্পনা কমিশনের মতে, বর্তমানে মেট্রোরেলের যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে তার কোনোটি পুরান ঢাকাকে সংযুক্ত করে না। তবে এমআরটি লাইন-২ এর মাধ্যমে ঢাকার গাবতলীর সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের মেট্রোরেল সার্ভিস চালু হলে পুরান ঢাকাকে সংযুক্ত করবে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-২ নির্মাণে আনুমানিক ৬০,৮৩৭ কোটি টাকা খরচ হবে। 

এছাড়া একটি বিকল্প প্রস্তাবে এমআরটি লাইন-২-এর গাবতলী থেকে কারওয়ানবাজার অংশ বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে এমআরটি-২-এর একটি ব্রাঞ্চ লাইন বিজয় সরণীতে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এমআরটি লাইন-৫ নিয়ে একটি প্রস্তাব হলো, কাওরান বাজার থেকে দশেরকান্দি পর্যন্ত নির্মাণ করা। অন্য আরেকটি প্রস্তাব হলো, পুরো এমআরটি লাইন-৫ রুট প্রকল্পটি আপাতত বাতিল করা এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে এটি পুনর্বিবেচনার পরামর্শ দেওয়া। 

উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে পরিকল্পনা কমিশন এমআরটি লাইন-৫ এর কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি পর্যালোচনা সভা করেছিল। সভার তথ্য মতে, গাবতলী থেকে দশেরকান্দি পর্যন্ত ১৭.২ কিলোমিটার পথ নির্মাণে ব্যয় হবে ৫৪,৬১৮ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের জন্য এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক ও দক্ষিণ কোরিয়া ৩৯,১৩৮ কোটি টাকা অর্থায়নে সম্মত হয়েছে। বাকি ১৫,৪৮১ কোটি টাকা সরকারের কাছ থেকে নেওয়া হবে বলে আশা করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh