সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকের দিকে হাতুড়ি নিয়ে তেড়ে যাওয়ার ঘটনায় আলোচনায় আসা ইমারত পরিদর্শক মো. সোলাইমান হোসাইনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন রাজউক চেয়ারম্যান মো. রিয়াজুল ইসলাম। গত ৯ এপ্রিল সোলাইমান হোসাইনকে বরখাস্ত করে রাজউকের প্রশাসন শাখায় ন্যস্ত করা হয়েছে। বিধি অনুযায়ী এখন তিনি খোরাকি ভাতা পাবেন।
রাজউকের অফিস আদেশের তথ্য অনুযায়ী- ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান হোসাইন তার কর্ম এলাকায় ঠিকমতো নজরদারি করেননি। এ ছাড়া নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে গড়ে ওঠা ভবনের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেননি সোলাইমান। এমনকি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও এ সময় অনিয়মের তথ্য জানাননি। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অথরাইজড অফিসার ও প্রকৌশলী শেগুফতা শারমীন আশরাফ এর কাছ থেকে অভিযোগ যায় রাউজকের সদর দফতরে।
এ সব অভিযোগের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি সোলাইমান হোসাইন।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে- সোলাইমান হোসাইনের কর্মকাণ্ডে রাজউকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তার এরকম কর্মকাণ্ড চাকরিবিধি অনুযায়ী অসদাচরণের শামিল এবং গুরুদণ্ড আরোপযোগ্য অপরাধ।
রাজউকের ইমারত পরির্দশন সোলাইমান হোসাইনের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে।
রাজধানীর মহাখালীতে জোনাল অফিসে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন সাপ্তাহিক দ্য রিপোর্টের ক্রাইম রিপোর্টার মাহতাবুর রহমান। গত ৩০ জানুয়ারি জোন ৩/২ কার্যালয়ে ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান হোসাইন ও তার সহকর্মীদের হাতে লাঞ্চিত হন ওই সাংবাদিক।
সাংবাদিক মাহতাবুর রহমান জানিয়েছিলেন, সংবাদের প্রয়োজনে তিনি রাজউকের জোনাল পরিচালক সালেহ আহমদ জাকারিয়ার বক্তব্য নিতে তার কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে না পেয়ে ফেরত আসছিলেন। এ সময় ইমারত পরিদর্শক সোলায়মান হোসাইন ও আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিক মাহতাবুর রহমানকে অফিস রুমে ডেকে নেন।
সোলাইমান হোসাইনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ক্ষেপে ছিলেন তিনি। অফিসে ডেকে নিয়ে ওই সাংবাদিককে হুমকি-ধমকি ও গালাগালি করতে থাকেন। গালাগালির এক পর্যায়ে সোলাইমান হোসাইন তার ড্রয়ারে থাকা হাতুড়ি বের করে ওই সাংবাদিকের দিকে তেড়ে আসেন। এ সময় লাঞ্ছনার শিকার হন দ্য রিপোর্টের ক্রাইম রিপোর্টার মাহতাবুর রহমান, রিপোর্টার মহিবুল্লাহ, দৈনিক আমার সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মো. শাহ আলম, দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার রিপোর্টার মো. হান্নান।
পরে রাজউকের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের সরিয়ে দেন।
রাজউক পরিদর্শক সোলাইমান হোসাইনের শাস্তি চেয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন করেছিলেন সাংবাদিকরা। পাশাপাশি রাজউক চেয়ারম্যানের কাছেও অভিযোগ দেওয়া হয়।
ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান হোসাইনের বিরুদ্ধে নোটিশ বাণিজ্য, ভবন মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন, ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে সোলাইমান হোসাইনের মোবাইল ফোনে কল করে তাকে পাওয়া যায়নি।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh