
উইকেট পাওয়ার পর শরীফুলকে ঘিরে টাইগারদের উল্লাস। ছবি: সংগৃহীত
সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৫৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান করে লঙ্কা। বাংলাদেশের পক্ষে তাসকিন ও হাসান ৩টি করে উইকেট নেন।এর আগে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান
টানা বৃষ্টির কারণে কলম্বোর উইকেটে শুরু থেকেই ছিল সুইং। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে ষষ্ঠ ওভারেই প্রথম উইকেট পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শুরুতে লঙ্কানদের হাল ধরেছিলেন কুশাল মেন্ডিস।
বাকি সময়টা বাংলাদেশের বোলারদের দিশাহারা করেছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। তিনি শেষদিকে আউট হয়েছেন ৭২ বলে ৯৩ রান করে। আর তাতেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার হাসান। তিনি ৫৭ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
টসে জিতে বোলিংয়ে নেমে বাংলাদেশের বোলাররা দারুণ বোলিং করলেও উইকেট পাচ্ছিলেন না। অবশেষে সেই আক্ষেপ ঘুচান হাসান। তার করা লেংথ ডেলিভারিতে আউটসাইড এজ হয়ে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ১৮ রান করা দিমুথ করুনারত্নে।
এরপর লম্বা সময় উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় বেশ কয়েকবার সুযোগ হাতছাড়া করেছে টাইগাররা। ব্যক্তিগত ৩৬ রানে হাসান মাহমুদের বলে পাথুম নিশাঙ্কার ক্যাচ ফেলেছেন মুশফিকুর রহিম। এরপর শরিফুলের শর্ট লেংথের বলে পুল করেছিলেন মেন্ডিস, স্কয়ার লেগে থাকা শামীমের হাত গলে বেরিয়ে সেটি ছক্কা হয়ে যায়। একটু পেছনে থাকলে এই ক্যাচ শামীম নিতে পারতেন অনায়াসে। ফলে ২৯ রানে জীবন পেয়ে যান মেন্ডিস।
অবশ্য এর খানিক বাদেই নিশাঙ্কা ও মেন্ডিস মিলে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ একশো পার করেন। তাদের জুটি ভেঙেছেন টাইগার পেসার শরিফুল ইসলাম। এই টাইগার পেসার তার ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ করে আউট করেছেন ৬০ বলে ৪০ রান করা নিশাঙ্কাকাকে। এর ফলে মেন্ডিসের সঙ্গে তার দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙে ৭৪ রানে।
৭২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন মেন্ডিস। এরপরই ধৈর্য্য হারিয়েছেন লঙ্কান এই ব্যাটার। শরিফুলের করা বাউন্স বলে আপার কাট করেছিলেন মেন্ডিস। তবে ব্যাটে বলে করতে না পারলে বল চলে যায় সোজা থার্ড ম্যান অঞ্চলে থাকা তাসকিন আহমেদের হাতে। তিনি জায়গায় দাঁড়িয়ে সহজ ক্যাচ নিয়েছেন।
চারিথা আসালাঙ্কাকে বেশিক্ষণ থিতু হতে দেননি তাসকিন। এই টাইগার পেসারের করা স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে টপ এজ করেছেন আর লং অফ থেকে দৌড়ে গিয়ে সেই ক্যাচ লুফে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। আসালাঙ্কার ইনিংস শেষ হয়েছে ব্যক্তিগত ১০ রানে। এর ফলে সাদিরা সামারাবিক্রমার সঙ্গে তার জুটি বড় হতে দিলেন না তাসকিন।
খানিক বাদে হাসান মাহমুদের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ৬ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার চাপ বাড়িয়েছেন টাইগার পেসার হাসান। যদিও এরপর শ্রীলঙ্কার রান বাড়িয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও দাসুন শানাকা।
এই জুটি গড়ার পথেই ৪২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সামারাবিক্রমা। দুজনে মাত্র ৪৭ বলে জুটির হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। ৩১ বলে ২১ রান করা শানাকা বোল্ড হয়েছেন হাসানের বলে স্কুপ খেলতে গিয়ে। এর ফলে শেষ হয় সামারাবিক্রমা ও শানাকার ৬০ রানের জুটি। শেষদিকে দুনিথ ওয়েলালাগেকে রান আউট করেছেন হাসান। ইনিংসের শেষ ওভারে মাহিশ থিকশানাকে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়েছেন তাসকিন।
দারুণ খেলতে থাকা সামারাবিক্রমাকে সেঞ্চুরি পেতে দেননি তাসকিন। শেষ ওভারে চার বল খেলার সুযোগ পেলেও তাকে ১০ রান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে। তাসকিনের করা ইনিংসের শেষ বলে ওয়াইড লং অন দিয়ে তুলে মেরেছিলেন সামারাবিক্রমা। যদিও জুতসই শট না হওয়ায় ধরা পড়েন আফিফ হোসেনের হাতে। আর তাতেই সামারাবিক্রমার ইনিংসের সঙ্গে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার লড়াই।
শ্রীলঙ্কা- ২৫৭/৮ (৫০ ওভার) (করুনারত্নে ১৮, নিশাঙ্কা ৪০, মেন্ডিস ৫০, সামারাবিক্রমা ৯৩; হাসান ৩/৫৭)
বাংলাদেশ একাদশ:
লিটন দাস, নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, নাসুম আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।
শ্রীলংকা একাদশ:
পাথুম নিশাঙ্কা, দ্বিমুখ করুণারত্নে, কুশল মেন্ডিস, শাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আশালাঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দাশুন শনাকা, দুনিথ ওয়েল্লালাগে, মাহিশ থিকসানা, কাশুন রাজিথা ও মাথিসা পাথিরানা।