Logo
×

Follow Us

ক্রিকেট

বিশ্বকাপ ক্রিকেট দল পরিচিতি: দক্ষিণ আফ্রিকা

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০২

বিশ্বকাপ ক্রিকেট দল পরিচিতি: দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকা দল। ছবি: সংগৃহীত

অংশগ্রহণ: ৯
সেরা সাফল্য: ৪ বার সেমিফাইনাল (১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭ ও ২০১৫)
মোট ম্যাচ: ৬৪
জয়: ৩৮
হার: ২৩
টাই: ২
নো রেজাল্ট: ১

বিশ্বকাপের ‘অভাগা’ দল হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা। যাদের নামের পাশে জুড়ে আছে চোকার শব্দটি। একাধিকবার অন্যতম সেরা স্কোয়াড নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হোঁচট খেয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ার কারণেই ‘চোকার’ শব্দটি জুড়ে গেছে প্রোটিয়াদের সঙ্গে। ভারতের মাটিতে টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বে আফ্রিকান প্রতিনিধিরা চেষ্টা করবে পুরোনো বদনাম ঝেড়ে ফেলতে।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভারতের মাটিতে পা রাখছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম দুই ম্যাচে হারার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে টেম্বা বাভুমা অ্যান্ড কোং। টানা তিন জয়ে নিজেদের করে নিয়েছে সিরিজ। সিরিজে হেনরিক ক্লাসেন, এইডেন মার্করাম আর অধিনায়ক বাভুমা ১টি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। কুইন্টন ডি কক সেঞ্চুরি না পেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সিরিজে চতুর্থ সর্বোচ্চ ২১০ রান করেছেন। পাঁচ ম্যাচে দুটি হাফসেঞ্চুরিসহ ২০২ রান করা ডেভিড মিলারের ‘কিলার’ রূপ। অজিদের বিপক্ষে প্রোটিয়া ব্যাটারদের রানে ফেরা স্বস্তি দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টকে।

এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ড ছিল অসাধারণ। যার প্রমাণ তিন ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে যথাক্রমে ১১১ রানে, ১৬৪ রানে ও ১২২ রানে জয়। কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি আর এনরিখ নরকিয়া সামাল দেবেন বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার পেস অ্যাটাক। কেশব মহারাজ আর তাবরেইজ শামসি মায়াবী স্পিনে কুপোকাত করার চেষ্টা করবেন প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কেশব বিশ্বকাপে থাকছেন দলের সহ-অধিনায়ক ।

কুইন্টন ডি কক, রেজা হেনড্রিংক, হেনরিখ ক্লাসেন, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার এবং রাসি ভ্যান ডের ডুসেনের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা রয়েছেন প্রোটিয়া বিশ্বকাপ স্কোয়াডে।

স্কোয়াডে জেরাল্ড কোয়েৎজিকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রেখেছেন জেরাল্ড। মাত্র ৬ ম্যাচেই ১১ উইকেট নেওয়া ২২ বছর বয়সী পেসার হতে পারেন প্রোটিয়াদের ‘তুরুপের তাস’। ২০২৩ সালের শুরুটা দক্ষিণ আফ্রিকা করেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে। কিন্তু মার্চেই বিশ্বকাপ বাছাই থেকে ছিটকে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ২-০ ব্যবধানে খুইয়ে বসে ওয়ানডে সিরিজ। কিছুদিনের মধ্যেই বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া হল্যান্ডকে দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইট করার স্বাদ পায়। 

বর্তমানে একদিনের ক্রিকেটে আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ের চার নাম্বারে রয়েছে টেম্বা বাভুমা অ্যান্ড কোং। ভারসাম্যপূর্ণ স্কোয়াড নিয়ে ভাগ্যের সহায়তা পেলে দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাস নতুন করে লিখতে সক্ষম। 

দলীয় সর্বোচ্চ: ৪১১/৪, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, ক্যানবেরায় ২০১৫ বিশ্বকাপে

দলীয় সর্বনিম্ন: ১৪৯, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, সেন্ট লুসিয়ায় ২০০৭ বিশ্বকাপে

বিশ্বকাপ দল: টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), জেরাল্ড কোয়েৎজি, কুইন্টন ডি কক, রেজা হেনড্রিংক,

মার্কো জানসেন, হেনরিখ ক্লাসেন, সিসান্ডা মাগালা, কেশভ মহারাজ, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, লুঙ্গি এনগিডি, এনরিখ নর্কিয়া, কাগিসো রাবাদা, তাবরাইজ শামসি, রাসি ফন ডার ডাসেন।

ব্যক্তিগত সেরা ব্যাটিং: গ্যারি কারস্টেন, ১৮৮*

বিশ্বকাপের ইতিহাসে তো বটেই; এক সময় গ্যারি কারস্টেনের এই অপরাজিত ১৮৮ রানের ইনিংসটি ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসেই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল। সময়ের ব্যবধানে সেটি এখন তিনে। তবে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিনি যখন রেকর্ডটি গড়েন, সবাই বলাবলি করছিল কারস্টেনের এই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে না। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বিশ্বকাপে কেউ কারস্টেনকে টপকাতে পারেননি। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে সেদিন ইনিংস ওপেন করতে নেমে কারস্টেন মাঠ ছেড়েছিলেন ইনিংস শেষ করে, অপরাজিত থেকে। তার ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ২ উইকেটে ৩২১ রান। জবাবে আরব আমিরাত ৮ উইকেটে করতে পারে ১৫২ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ জিতে ১৬৯ রানে।

ব্যক্তিগত সেরা বোলিং: অ্যান্ড্রু হল, ৫/১৮

স্পেশালিস্ট কোনো বোলারের নয়, বিশ্বকাপের ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলিং কীর্তি অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু হলের দখলে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ব্রিজটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১৮ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। অ্যান্ড্রু হল ও আন্দ্রে নেলের তোপে ইংল্যান্ড মাত্র ১৫৪ রানেই অলআউট হয়ে যায়। আন্দ্রে নেল নেন ৩ উইকেট। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ১ উইকেট হারিয়েই ছুঁয়ে ফেলে লক্ষ্য (১৫৭/১)। ম্যাচসেরার পুরস্কারটি অ্যান্ড্রু হলের হাতেই ওঠে।

টেম্বা বাভুমা
ব্যাট হাতে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ২০২৩ সালেই এ পর্যন্ত ১০টি ম্যাচ খেলেছেন। সেই ১০ ম্যাচে অবিশ্বাস্য ৭৯.৬২ গড়ে করেছেন ৫৪২ রান। আছে ৩টি শতক ও ২টি অর্ধশতক। ২০১৬ সালে ওয়ানডে অভিষেক হলেও ৩৩ বছর বয়সি প্রথম দুই বছরে খেলেন মাত্র দুটি ওয়ানডে। পরের তিন বছর দলে জায়গাই পাননি। তবে ২০২০ সাল থেকে শুধু দলে নিয়মিতই হয়ে ওঠেননি, দলের বড় ব্যাটিং ভরসার নামও টেম্বা বাভুমা। অধিনায়কত্বের গুরু দায়িত্বও তার কাঁধেই। এবার অপেক্ষা প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার। টেম্বা বাভুমা নিশ্চয় চাইবেন বিশেষ কিছু করে বিশ্বকাপটা রাঙিয়ে তুলতে।

রব ওয়াল্টার
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের জন্য কোচ হিসেবে বেছে নেয়  রব ওয়াল্টারকে। ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ হিসেবে ওয়াল্টারের কাঁধে  থাকছে গুরুদায়িত্ব। 

ওয়াল্টার ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রোটিয়াদের স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া দল সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের প্রধান কোচ হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। প্রোটিয়াদের ব্যাটিং দেখভাল করছেন সাবেক ক্রিকেটার জেপি ডুমিনি। আর ফিল্ডিং কোচ  ওয়েন্ডিলে গুয়াভু। বোলিং কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ররি ক্লেইনভেল্ডটকে। যদিও তিনি অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পালন করছেন।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫