-6651c485e89cb.jpg)
সাকিব আল হাসান ও রিশাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
সাকিব আল হাসান ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। আগামী বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। ২০২৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রয়েছে। ৩৯ বছর বয়সে তিনি আর একটি বিশ্বকাপ খেলতে যাবেন না। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবীয় দ্বীপে। সাকিবের সঙ্গী হয়েছেন লেগ স্পিনার ও ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলতে জানা রিশাদ হোসেন। বয়সে সাকিবের অর্ধেক এই ছেলে চমক উপহার দেবেন এমন বিশ্বাস সবার।
সাকিব বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার। বাঁ-হাতি এই স্পিন জাদুকর ব্যাটিংয়েও ভরসার নাম বছরের পর বছর ধরে। তিনি শেষ বলে দিচ্ছেন। আর সে সময় যেন আলোর মতো হাজির রিশাদ! যেন ব্যাটন হাতবদল হতে চলেছে। এত আগে এমনভাবে বলা ঠিকও নয়। তারপরও বাংলাদেশ অনেক মারকুটে ব্যাটসম্যান দেখেছে। রিশাদ সবার চেয়ে আলাদা। প্রতিটি বল মাঠ ছাড়া করার প্রত্যয় তার। লেগ স্পিনেও খারাপ নন। অ্যাথলেটদের মতো পেটানো শরীর। দৈহিক গড়ন স্প্রিন্টারদের মতো। উচ্চতা ১.৮৯ মিটার। লেগ স্পিনেও রয়েছে বৈচিত্র্য। গুগলিও করতে পারেন তিনি। কোচ হিসেবে এ বিশ্বকাপে পাশে পেয়েছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি মুশতাক আহমেদকে। ক্যারবীয়র উইকেট স্পিন সহায়ক। কিছু স্লো হওয়ায় রিশাদ বাজির ঘোড়া হতে পারেন বাংলাদেশের। লোয়ার অর্ডারে রান খরায় ভোগে বাংলাদেশ। রিশাদ সে জায়গায় বাংলাদেশকে বিশাল সুবিধা এনে দিতে পারেন।
সাকিব ও রিশাদ পুরোটাই ক্রিকেটের বিচারে আলাদা চ্যাপ্টার। কোনো মিলই খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে এতটা বলা যায়, রিশাদ আগামীতে বাংলাদেশকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারেন। ডান-হাতি এই ২১ বছর বয়সী ক্রিকেটার ঝুঁকিও নেন। ‘ক্রিকেট এক বলের খেলা’ এটাই তিনি জানেন। তবু সব বলেই আক্রমণ করতে চান তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নজর নিজের দিকে নিয়ে যেতে পারে। পাকিস্তানে একসময় লেগ স্পিনার ও অলরাউন্ডার ছিলেন শহীদ আফ্রিদি। আফ্রিদির স্বকীয়তা আর কারও নেই। দল, ভেন্যু, পরিস্থিতি-যা-ই হোক না কেন প্রতিটি বল মাঠের বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করতেন। আর এসব কারণে পাকিস্তান বিপদে পড়েছে, হেরেছে কত ম্যাচ তার ইয়ত্তা নেই। আবার অনেক ম্যাচ আফ্রিদি জিতিয়েছেনও। ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক তিনি। রিশাদকে নিয়ে এখনই কেউ এমন ভাবতে নারাজ। তবে তার সে যোগ্যতা রয়েছে।
এবার সাকিব যখন অফিসিয়াল ফটোশুট করেছেন তখন তার চোখের পুরনো সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদিও ফিটনেস ধরে রেখেছেন। তবে বয়স এখন ৩৭। চোট নিত্যসঙ্গী। মাগুরার এমপি হয়েছেন। ওদিকে ছেলেমেয়ে কেবল বেড়ে উঠছে। বাবা হিসেবে এ সময় পরিবারের পাশে থাকতে চান তিনি। সে জন্য ২০২৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে বিশ্বকাপে আর যাবেন না। ২০২৩ সালে ভারতের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছেন। ওয়ানডে ফরম্যাটে সেটাই শেষ। আর
টি-টোয়েন্টি ২০২৪ দিয়ে ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ পর্বের সমাপ্তি টানবেন। মজার রেকর্ডও সাকিবের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিবের (৪৭টি)। আফ্রিদি ৩৯ উইকেট নিয়ে পরের অবস্থানে রয়েছেন।
সাকিব এক বৈচিত্র্যময় চরিত্র। খবরের শিরোনাম হন সব সময়। সেটা খেলার মাঠে ও বাইরে সবখানেই। রিশাদ সেখানে বেশ চুপচাপ। কথা কম বলেন। যেন অপ্রকাশিত কথাগুলো ছক্কা বানিয়ে মাঠের বাইরে পাঠাতে চান তিনি! সাকিব সমালোচনাগুলোকে যেভাবে এতদিন মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন। তবে সে যেমনই হোক, এ বিশ্বকাপে সাকিব ও রিশাদ বাংলাদেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন। দুজনেরই সামর্থ্য আছে। শুধু ভালো একটা দিনের অপেক্ষা।