
জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর
বাংলাদেশকে ৪৬৮ রানে থামিয়ে দিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোভাবেই করেছে জিম্বাবুয়ে। তাকুদসওয়ান্সে কাইতানো এবং মিল্টন শুম্বা নতুন বলে বাংলাদেশের পেস বোলিং অ্যাটাক এবং সাকিব আল হাসান-মেহেদি হাসান মিরাজদের ভালোভাবেই সামাল দেন।
ব্যাটিংয়ের প্রথম ঘন্টায় ১৩ ওভারে ৩৫ রান যোগ করে এই জুটি। এরপর ২৫ ওভার পর্যন্ত দেখেশুনে খেলে দলের রান ৫০'র ওপর নিয়ে যান। কাইতানোর চেয়ে শুম্বা একটু হাত খুলেই ব্যাটিং করেন।
তবে ইনিংসের ২৮তম ওভারে ধৈর্য হারিয়ে সাকিবের ফুলার লেন্থের বলকে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন এই ওপেনার। ৮৩ বলে ৭ বাউন্ডারির সাহায্যে ৪১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ওপেনার। তার বিদায়ে ক্রিজে এসেছেন অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর।
দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান। বাংলাদেশ থেকে ৩৫৪ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
এর আগে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারিরা। ১২৯ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে লিটন দাসের সঙ্গে নিয়ে ১৩৮ রানের জুটি গড়ে প্রথমদিন বাংলাদেশকে শুরুর বিপর্যয় থেকে সামলে নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর তাসকিন আহমেদের সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে নবম উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়েন তিনি। সেই সঙ্গে নিজে খেলেছেন দেড়শ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। তাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক মাত্র টেস্টে বাংলাদেশও ৪৬৮ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে।
৮ উইকেটে ২৯৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। যেখানে শুরু থেকেই দারুণ ব্যাটিং করতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রান বাড়াতে থাকেন তাঁরা দুজন। প্রথম সেশনে কোন উইকেট না হারিয়ে প্রথম সেশনে রাজত্ব করে বাংলাদেশ। যেখানে ২৪ ওভারে ১১০ রান তোলে এই দুই ব্যাটসম্যান।
এদিকে প্রথম সেশনে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান তাসকিন। যা কিনা তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় দিনের সকাল থেকে দারুণ ব্যাটিং করলেও একবার জীবন পেয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত ৩২ রানে পেসার রিচার্ড এনগারাভার বলে জীবন পান তাসকিন। দ্বিতীয় স্লিপে সহজ ক্যাচ ছাড়েন মিল্টন শুম্বা।
মধ্যাহৃ বিরতি থেকে ফিরেও দারুণ ব্যাটিং করতে থাকেন তাঁরা দুজন। ব্যাট হাতে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর সেঞ্চুরি করারও সুযোগ ছিল তাসকিনের। তবে সেই লুফে নিতে পারেননি তিনি। শুম্বার বলে তুলে মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে ফিরলে ভেস্তে যায় তাঁর সেই সুযোগ। তবে ১৩৪ বলে ৭৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে দারুণ ভূমিকা পালন করেছেন তাসকিন।

ইনিংসটি খেলতে ১১টি চার মেরেছেন তিনি। তাসকিনের বিদায়ে ভাঙে তাঁদের দুজনের ১৯১ রানের জুটি। অনবদ্য জুটির পরও আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে তাঁদেরকে। মাত্র ৫ রান করলেই নবম উইকেট জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার ও প্যাট সিমকক্সের করা ১৯৫ রানের রেকর্ড জুটি ছাড়িয়ে যেতে পারতেন তাঁরা। সুযোগ লুফে নিতে না পারায় মাহমুদউল্লাহ-তাসকিনের জুটিটি দ্বিতীয় হয়ে থাকলো।
যদিও বাংলাদেশের হয়ে নবম উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়েছেন তাঁরা দুজন। পেছনে ফেলেছেন মাহমুদউল্লাহ ও আবুল হাসান রাজুর ১৮৪ রানের জুটি। সেই জুটিতে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন আবুল। এদিকে তাসকিন সেঞ্চুরি হাতছাড়া করলেও দেড়শো রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ব্লেসিং মুজারাবানির ইয়র্কার লেন্থের বল ডিপ স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে ২৭৮ বলে দেড়শ পূরণ করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
ইনিংসটি খেলতে ১৭টি চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। ক্যারিয়ারে এটিই তাঁর প্রথম দেড়শ রানের ইনিংস। এর আগে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ প্রান্ত বদল করার এক বল পরই আউট হয়েছেন এবাদত হোসেন। মুজারাবানির ফুল লেন্থ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি।
তাতে বাংলাদেশ অল আউট হয় ৪৬৮ রানে আর ২৭৮ বলে ১৫০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। যা কিনা এই ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এ ছাড়া লিটন ৯৫ ও মুমিনুল হক করেছেন ৭০ রান। জিম্বাবুয়ের হয়ে মুজারাবানি চারটি উইকেট নিয়েছেন। এ ছাড়া ডোলান্ড ট্রিপানো ও ভিক্টর নিয়াউচি নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।