Logo
×

Follow Us

ক্রিকেট

সাক্ষাৎকারে নারী ক্রিকেট অধিনায়ক সালমা

ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল সুগৃহিণী হব

Icon

মোস্তফা তারিক আল বান্না

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২১, ১০:১২

ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল সুগৃহিণী হব

সালমা খাতুন

বিচিত্র মানুষের মন। তাই বিভিন্ন জনের বিভিন্ন আশা থাকে, স্বপ্ন থাকে। একান্ত ছোটবেলার সেই স্বপ্ন মোতাবেক কেউ হন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, খেলোয়াড়, বৈজ্ঞানিক, কেউ রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, কেউ লেখক কিংবা সাংবাদিক, আবার কেউবা হন ব্যবসায়ী; কিন্তু একেবারে সাধারণ পরিবারের মেয়ে সালমা খাতুনের আশা ছিল ভালো একজন গৃহিণী হওয়ার। ভালো একটা বর পাবেন, ভালো সংসারী হবেন- এই স্বপ্ন নিয়ে ছোটবেলা কাটলেও বড় হয়ে সালমা হলেন ঠিক তার উল্টোটা।

এখন পর্যন্ত বিয়ের পিঁড়িতেই বসা হয়নি তার। যার কারণ, ক্রিকেট। ক্রিকেটকে ভালোবেসে দেশের জন্য আত্মত্যাগ করতে গিয়ে এখনো বিয়ে করা হয়নি বাংলাদেশ জাতীয় টি-টোয়েন্টি নারী দলের অধিনায়ক সালমার। করোনা কাল বলেই অফুরন্ত সময়। ফলে তার একান্ত সাক্ষাৎকার নেওয়ার কাজটা কিছুটা সহজ হয়েছে।

কীভাবে খেলোয়াড় হয়ে উঠলেন?
ছোটবেলায় মামাদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম। মামা ও মামার বন্ধুরা ছিল আমার ক্রিকেট মাঠের সঙ্গী। আমি ছাড়া দ্বিতীয় কোনো মেয়ে ছিল না ওই সময়। মানে আমি ছেলেদের সঙ্গে খেলেই আজ খেলোয়াড় হয়েছি। ২০০৭ সালে শঙ্কর দাদা ও মরহুম শেখ সালাউদ্দিন খুলনায় একটি ক্রিকেট শিবিরের আয়োজন করেন। সেখানে আমি থ্রি পিস পড়েই প্র্যাকটিস করি। আমার বোলিং ও ব্যাটিংয়ে দারুণ খুশি হন তারা দু’জনেই। উনারা জিজ্ঞেস করেন, আমার ট্রাউজার আছে কি-না। আমি বলি নাই। পরে সালাউদ্দিন ভাই আমার জন্য ট্রাউজার, টি-শার্ট, বুট কিনে আনেন। আমি ঢাকায় একটি টুর্নামেন্টে অংশ নেই। সেখানে আমার স্পিন বোলিং ও ব্যাটিং দেখে বিসিবির কর্মকর্তারা খুশি হন। 

বাংলাদেশে প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি সম্পর্কে কিছু বলুন?
বিসিবি প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি চালিয়ে আসছে বেশ ভালোভাবেই। করোনাকালের কারণে গত প্রায় দুই বছর ধরে তা বন্ধ। তবে আমি এটা বলব, বিসিবির প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেকগুণ বেড়েছে। কেউ যদি মনে করেন, প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি কমে যাচ্ছে, আমি তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করব। আশা করি, বর্তমানে যেভাবে প্রতিভা খুঁজে বের করা হচ্ছে, তাতে ভবিষ্যতে অনেক প্রতিভাবান পুরুষ ও নারী ক্রিকেট খেলোয়াড় পাব আমরা।

নতুনদের প্রতি আপনার উপদেশ? 
এখন যারা নতুন খেলোয়াড় হিসেবে আসছেন, তাদের অনেক বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে। ফলে বাইরে যেতে না পারলেও ঘরোয়াভাবে শরীরচর্চা, অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে। সুস্থতার কোনো বিকল্প নেই। আর নিজেকে ওপরে তুলতে হলে সবসময় ডিসিপ্লিন বজায় রাখতে হবে। মনমানসিকতা থাকতে হবে স্বচ্ছ ও সৎ। তাছাড়া, সহযোগিতামূলক মনোভাব থাকতে হবে, নিজের স্বার্থের জন্য অহঙ্কার-হিংসা মনে রাখা যাবে না। সেটা ক্রিকেট মাঠে হোক আর ক্রিকেটের বাইরে হোক। মাদক, অসৎ সঙ্গ থেকে নতুনদের দূরে থাকতে হবে। তা না হলে কেউ দীর্ঘ দিন ভালো খেলতে পারবে না। অচিরেই ঝরে যাবে।

আপনি অবসরে কী করেন? 
ক্রিকেটের বাইরে গান শুনতে ও বই পড়তে ভালো লাগে। পুরনো দিনের বাংলা ও হিন্দি গান শুনতে পছন্দ করি। আর আমার ইচ্ছে আছে, বাড়ির ছাদে বড় একটা বাগান করব। অনেককেই দেখি ছাদে বাগান করেছেন। তাই আমার একান্ত ইচ্ছে, ভবিষ্যতে ছাদবাগান নিয়েই নিজেকে ব্যস্ত রাখব। 

আর কতদিন ক্রিকেট খেলবেন? 
জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা থাকবে যতদিন ততদিন তো খেলবোই। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার ইচ্ছা রয়েছে। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর সুযোগ হলে কোচিংকে ভবিষ্যৎ পেশা হিসেবে নেব। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫