এমপি আনার হত্যা
এমপি মনোনয়ন চাওয়াই আমার অপরাধ, আদালতকে মিন্টু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪, ১৮:৪৬

সাইদুল করিম মিন্টু। ফাইল ছবি
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে ৮ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) এ আদেশ দেন।
এর আগে তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহফুজুর রহমান। আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলায় মিন্টুর রিমান্ড শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের পুরো বিষয়টি জানতেন মিন্টু। এরপর বিচারক মিন্টুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি কিছু বলবেন? জবাবে মিন্টু বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এমপি মনোনয়ন চাওয়াই আমার অপরাধ।
মিন্টুর রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপি আনার হত্যায় সরাসরি জড়িত গ্রেপ্তার শিমুল আদালতে যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে আসামি সাইদুল করিম মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা আছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্তে মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে থাকা আসামি কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু এমপি আনার অপহরণে মিন্টুর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। মূল পরিকল্পনাকারী শাহিন আসামি মিন্টুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন।
শিমুল তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, চলতি বছরের ৫ ও ৬ মে এমপি আনারকে প্রলুব্ধ করে অপহরণ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিন আসামি সাইদুল করিম মিন্টুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন এবং এমপি আনার হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সাপেক্ষে আর্থিক লেনদেনের কথা বলেন। হত্যার প্রমাণস্বরূপ ছবি আদান-প্রদান করা হয়।
এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। তার শরীরের হাড় থেকে মাংস আলাদা করে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয় সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে। আর হাড় ফেলা হয় খালে। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে।
ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন (২৪) অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসাবে এ পর্যন্ত ১২ জনের নাম বেরিয়ে এসেছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন সাত জন। তারা হলেন-বাংলাদেশে গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর, শিলাস্তি, বাবু ও মিন্টু। এদের মধ্যে বাবু ও মিন্টু ছাড়া অন্যরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া ভারতে গ্রেপ্তার আছে সিয়াম ও কসাই জাহিদ। আর তিনজনের নাম এসেছে, যারা হত্যাকাণ্ডের সরাসরি জড়িত নয়। তবে আর্থিক লেনদেনের তারা ব্যবহৃত হতে পারে বলে ডিবির সন্দেহ। হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। এছাড়া পলাতক আছেন মোস্তাফিজ ও ফয়সাল।