ধানমন্ডিতে ‘ভুয়া’ র্যাব-ম্যাজিস্ট্রেট-সাংবাদিক পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৪:২৭

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন
রাজধানীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তিনটি মাইক্রোবাসে আসা ডাকাত দল নিজেদের র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক দাবি করে অভিযান পরিচালনার নামে ডাকাতি করে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও নগদ টাকাসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ আয়োজিত ‘ধানমন্ডিতে ডাকাতির ঘটনায় জনতার সহায়তায় ডাকাত গ্রেপ্তার ও আলামত উদ্ধার’- সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
রমনা জোনের এডিসি মাসুদ আলম জানান, একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত অপারেশন টিম হিসেবে ধানমন্ডিত এম এ হান্নান আজাদের বাসায় যায়। তিনি ‘অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। ডাকাতরা হান্নান আজাদের বাসাসহ একই ভবনের একাধিক ফ্লোরে ডাকাতি করে। পরে ৯৯৯-এ কল দিয়ে ঘটনা জানানো হলে, পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় ডাকাত দলের চারজনকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলসহ আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ফরহাদ বিন মোশারফ, ইয়াছিন হাসান, মোবাশ্বের আহাম্মেদ, ওয়াকিল মাহমুদ, আবদুল্লাহ ও সুমন।
এ সময় তাদের থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত র্যাব লেখা কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের র্যাব লেখা ক্যাপ, একটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরি ছেনি, একটি পুরাতন লাল রঙের স্লাইড রেঞ্জ ও নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে রমনা জোনের এডিসি বলেন, “২৬ মার্চ ভোর আনুমানিক ৪টা ৪০ মিনিটে তিনটি মাইক্রোবাস এবং একটি প্রাইভেটকারে অভিযুক্ত ডাকাতরা দলবদ্ধভাবে ওই বাসার সামনে এসে গেইটে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডদের বলে তারা র্যাবের লোক, তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আছে। এমনকি সাথে জিটিভির আদলে মাইক্রোফোন তৈরি করে নিয়ে যায়।
“তারা জোরপূর্বক বাড়িতে ঢুকার চেষ্টা করে। ঘটনায় ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে থ্রিপল নাইনে ফোন করা হয়। আমাদের পেট্রোল টিম সাথে সাথে ঘটনার স্থলে যায়। আমাদের দুইজনের উপর তারা হামলাও চালিয়েছে। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা মোট ৩ টি মাইক্রোবাস নিয়ে এসেছিল। এর মধ্যে একটা মাইক্রোবাস খুঁজে বের করা হয়ছে৷ এ সময় আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
সহায়তা করা জনগণকে পুরস্কৃত করা হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি মিডিয়া সেলের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “জনগণের মধ্যে যারা আমাদের সহযোগিতা করেছে তাদের মধ্যে ৫ জনকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে পুরস্কার ও অক্সিলারি পুলিশ অফিসার হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যের মধ্যে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সেনা সদস্য ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রয়েছে জানা গেলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ডিএমপি কর্মকর্তা।
পরিচয় প্রকাশ না করা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাদের আদালতে পাঠিয়েছি। আমরা কোনো অপরাধীকে ছাড় দেব না। আমরা আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি বিধান নিশ্চিত করবো। তবে পুরো টিমকে গ্রেপ্তারের স্বার্থে আমরা আপাতত কারো সম্পর্কে বিস্তারিত বলছি না।