রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বনানী থানা পুলিশ।

রবিবার রাতে বনানী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আল কামাল শেখ ওরফে কামাল, আলভি হোসেন জুনায়েদ এবং আল-আমিন সানি। গ্রেপ্তার তিনজনের কেউই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।

বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান সাম্প্রতিক দেশকালকে  তিনজনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মেহেদী হাসান বলেন, “প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় গতকাল রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

গ্রেপ্তারকৃতরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি কি না জানতে চাইলে বনানী থানার পরিদর্শক বলেন, “না, তারা এজাহারভুক্ত আসামি না। আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি, যারা এজাহারভুক্ত না। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

শনিবার বিকেল চারটার দিকে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় জাহিদুলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র। ‘হাসাহাসি’কে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করছে।

নিহত জাহিদুলের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের কাইচান গ্রামে।

জাহিদুলের বন্ধু মাজহারুল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় জাহিদুল ক্যাম্পাসের সামনে তার দুই বন্ধুকে নিয়ে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন। এ সময় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স-এর দুই ছাত্রী সেখানে উপস্থিত হন। ওই ছাত্রীদের ধারণা হয়, জাহিদুল ও তার বন্ধুরা তাদের নিয়ে হাসাহাসি করছিল। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে জাহিদুল ও তার বন্ধুরা তা অস্বীকার করে।

একপর্যায়ে ওই দুই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গিয়ে তিনজন বহিরাগতকে নিয়ে আসে। তারা এসে জাহিদুলদের কাছে হাসাহাসির বিষয়টি জানতে চায়। কথা-কাটাকাটি শুরু হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিষয়টি তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে এলে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়।

কিছুক্ষণ পর বহিরাগতরা আরও কয়েকজনকে নিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান নেয়। পরে জাহিদুল ফটক পার হয়ে বাইরে বের হওয়ার সময় তারা তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। জাহিদুলের বুক ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরির আঘাত রয়েছে। পরে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।