চুক্তির টাকা উঠাতে বদরুন্নেসার ছাত্রীকে হেনস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২১, ২৩:০৫

র্যাবের হেফাজতে দুই অভিযুক্ত। ছবি: সংগৃহীত
বাস মালিকের সঙ্গে দৈনিক চুক্তিভিত্তিক বাস পরিচালনার কারণে বাড়তি লাভের আশায় হাফ ভাড়া নিতে রাজি ছিলেন না ঠিকানা পরিবহনের চালক ও হেলপার। ভাড়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে বদরুন্নেসা কলেজের ওই ছাত্রীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর আচরণ করেন গাড়ির হেলপার।
রবিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চালক মো. রুবেল ও হেলপার মো. মেহেদী হাসানকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার হোতা হেলপার মেহেদী ওই ছাত্রীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও অশোভন আচরণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
রবিবার রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে তিনি শনির আখড়া থেকে কলেজে যাওয়ার জন্য ঠিকানা পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। তিনি শিক্ষার্থী হিসেবে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে হেলপার মেহেদী তা নিতে রাজি হননি। একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডার জেরে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন আচরণ করেন মেহেদী। ওই ছাত্রীকে বাস থেকে নামার সময়ও হেনস্থা করা হয়।
বিষয়টি শিক্ষার্থী মহলে ছড়িয়ে পড়লে তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঢাকার আরও ছয়-সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। রবিবার সকালে বকশিবাজার সড়ক অবরোধ করা হয় এবং তাদের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। একটি কুচক্রী মহল বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করে। এর প্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০ এর অভিযানে ঠিকানা পরিবহনের ওই চালক ও হেলপারকে আটক করা হয়।
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, রুবেল ও মেহেদী দৈনিক তিন হাজার টাকার চুক্তিতে মালিকের কাছ থেকে বাসটি নিয়ে পরিচালনা করতেন। তিন হাজার টাকার বেশি যা উঠতো, তা দুজন ভাগ করে নিতেন। বাড়তি লাভের আশায় তারা অর্ধেক ভাড়া নিতে চাইতেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হেলপার হাফ ভাড়া নিতে আগ্রহী ছিলেন না। অধিক লাভ ও বাড়তি টাকা উঠানোর জন্যই তারা এমনটি করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে মেহেদী ওই ছাত্রীকে গালাগালি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তবে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি।
আটকের পর ভুক্তভোগী তাদের দেখে শনাক্ত করেছেন উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, চালক নিজের লাইসেন্স আছে বলে দাবি করেছেন। তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। এছাড়া বাসের কাগজপত্রও যাচাই করে দেখা হবে।