প্রতীকী ছবি
রাজধানীর কোতয়ালী ও ধানমন্ডি এলাকা থেকে ১৩ হাজার পিস ভয়াবহ ‘ক’ শ্রেণির মাদক ডিওবি (ডাইমেথ অক্সি ব্রোমোঅ্যামফেটামাইন) উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। এসময় দুই মাদক কারবারিকে আটক করা হয়।
তারা হচ্ছেন- মো. আলমগীর সরকার ও জাহিদুল ইসলাম। গত শুক্রবার (১৯ নবেম্বর) থেকে কোতয়ালী থানার বাবু বাজার এলাকা ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ধানমন্ডি শাখায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ সব তথ্য জানান।
এর আগে আজ সকালে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘ডার্ক ওয়েবে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে পোল্যান্ড থেকে এই মাদক আনা হয়েছে। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশে এর চালান এসেছে। আমরা প্রথম এ ধরনের মাদক আটক করেছি।’
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার কোতয়ালী থানার বাবু বাজার এলাকা ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ধানমন্ডি শাখায় অভিযান চালিয়ে ডিওবিসহ আলমগীর ও জাহিদুলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অক্সি-মরফোন বিক্রয় ও বাজারজাত করার অনুমোদন দেয়। যা নির্দিষ্ট কোম্পানির নিকট হতে লাইসেন্স প্রদর্শনপূর্বক পরিবহনের রুট প্রদর্শন করে এবং কার কাছে বিক্রয় করা হবে তা প্রদর্শন করে গ্রহণ ও বিক্রয় করতে হয়।
দেশে অক্সি-মরফোন আমদানি ও বিক্রয়ের জন্য একমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে জিসকা ফার্মা। যারা সারা বাংলাদেশে ১২০ টি লাইসেন্সপপ্রাপ্ত ডিলারের মাধ্যমে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সরবরাহ করে থাকে। গত পাঁচমাসে পাঁচ লাখ ডোজ অক্সি-মরফোন বিক্রয় করেছে তারা। এটি শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের অনুমোদিত পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে।
কিন্তু মামলাটি তদন্তকালে দেখা হয়, ইদানিং ওরাল ফরমেটে অক্সি-মরফোন খুচরা বাজারে ব্যাপক হারে বিক্রয় হচ্ছে। যুব সমাজ বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা এই অক্সি-মরফোন গুড়ো করে যেকোনও সিরাপ বা পানির সাথে মিক্স করে মাদক হিসেবে ব্যবহার করছে, যা উদ্বেগের কারণ।
তিনি বলেন, অক্সি-মরফোন হলো মরফিনের একটি এনালগ, যা একটি এনালজেসিক ড্রাগ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি ইনজেকশন থেকে ওরাল ফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে। এটি মূলত কাজ করে সেন্ট্রাল নার্ভ সিস্টেমে (ব্রেইনে)। তীব্র ব্যথানাশক হিসেবে ক্যান্সার, হার্ট, দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী রোগীর তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
মাদক হিসেবে অক্সি-মরফোন ব্যবহারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, অক্সি-মরফোন একটি ইউফোরিক ড্রাগ। যা মস্তিষ্কে প্রচণ্ড আনন্দ অনুভূতি তৈরি করে। শরীরে সাময়িকভাবে দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা ভুলিয়ে দেয়। মস্তিষ্ক বোধহীন অসাড় হয়ে যায়। ক্রমাগতভাবে অক্সি-মরফোন ব্যবহারে এটির প্রতি নির্ভশীলতা তৈরি হয়।
ব্যবহারকারীরা এটি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।