শুধু অভিনয় নয়, বরং অভিনয়কে কেন্দ্র করেই দিনপার করতেন নায়করাজ রাজ্জাক। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র রাজ্জাক ২০১৭ সালের এই দিনেই নিয়েছিলেন চিরবিদায়। 

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে আজকের দিনেই পাড়ি জমান অনন্তলোকে। দেখতে দেখতে ছয় বছর পার হয়ে গেল। নায়করাজ আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন তার ভক্ত তথা আপামর জনতার শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায়। কর্মগুণে চির ভাস্বর হয়ে থাকবেন এ ধরায়।

ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে নায়করাজের পরিবার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি, প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সদস্যরা নায়করাজের স্মরণে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছেন আজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় নায়ককে স্মরণ করে পোস্ট করেছেন অনেকেই। নিজের হাতে গড়ে যাওয়া চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক বলেন, আজ সোমবার (২১ আগস্ট) বাদ আসর ওনার স্মরণে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে। সমিতির নেতা-সদস্যদের অনেকেই এতে অংশ নেবেন। আমরা সবাই মিলে প্রিয় নায়করাজের জন্য দোয়া করব।

নায়করাজ রাজ্জাকের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায়। তার আসল নাম আব্দুর রাজ্জাক। দেশ ভাগের সময় তিনি ঢাকায় চলে আসেন। অবশ্য কলকাতায় থাকতেই তিনি অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে তার পথচলার সূচনা।

বাংলাদেশে আসার পর রাজ্জাকের সিনেমা জীবন শুরু হয় ১৯৬৬ সালে। সিনেমাটির নাম ছিল ১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন। এখানে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন রাজ্জাক। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন নায়করাজ।

অভিনয়ের পাশাপাশি নায়করাজ রাজ্জাক ১৬ সিনেমাও পরিচালনা করেছিলেন। নিজের দুই পুত্র বাপ্পারাজ ও সম্রাটকে সিনেমায় এনেছেন। তারাও ছড়িয়েছেন অভিনয়ের খ্যাতি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয় তাকে। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে রাজ্জাক পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং একই আয়োজনে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। এছাড়া, বাচসাস, বাবিসাস ও মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারেও তাকে আজীবন সম্মাননা জানানো হয়।